রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত হলো এক গুরুত্বপূর্ণ নাগরিক সভা, যার আয়োজক ছিল জাতীয় ঐক্য ও সংহতি পরিষদ। “বাংলাদেশের কাঙ্ক্ষিত আগামীর জাতীয় সরকারের উপরেখা” শীর্ষক এই সভায় দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে বিশদ আলোচনা হয় এবং একটি প্রস্তাবিত জাতীয় সরকারের রূপরেখা উপস্থাপন করা হয়।
সভায় প্রস্তাবিত হয়, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে প্রধানমন্ত্রী এবং জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানকে উপপ্রধানমন্ত্রী করে একটি জাতীয় সরকার গঠন করা হবে। রাষ্ট্রপতির পদে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং উপরাষ্ট্রপতির পদে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড. বদির আলম মজুমদারকে মনোনীত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়।
এই প্রস্তাবিত সরকারের কাঠামোতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বদের অংশগ্রহণের কথা বলা হয়েছে। প্রস্তাবিত হিসেব অনুযায়ী, মন্ত্রিসভার সদস্যদের মধ্যে বিএনপির ২৫%, জামায়াতের ২০%, এনসিপির ১৫%, ইসলামী আন্দোলনের ৫%, বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ১০%, এবং অন্যান্য দলগুলোর প্রতিনিধিদের ২৫% স্থান দেওয়া হবে। এই অংশীদারিত্বের মাধ্যমে একটি ভারসাম্যপূর্ণ ও সমন্বিত জাতীয় সরকার গঠনের আশা প্রকাশ করা হয়।
সভায় বক্তারা বলেন, একটি ঐক্যবদ্ধ জাতীয় সরকার দেশের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অস্থিরতা নিরসনে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। তাঁরা মনে করেন, সংবিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীকেন্দ্রিক ক্ষমতা কাঠামোর পুনর্বিন্যাস করে রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতি ও উপপ্রধানমন্ত্রীর মধ্যে দায়িত্ব ও ক্ষমতার সুষম বণ্টন আনা দরকার। এর ফলে প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি পাবে, যা সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হবে।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন টাইমস ইউনিভার্সিটির বিজনেস ফ্যাকাল্টির ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জয়নুল আবেদিন। তিনি বলেন, দেশ এখন এমন এক মোড়ে দাঁড়িয়ে যেখানে একটি কার্যকর, দায়বদ্ধ ও সকল দলকে অন্তর্ভুক্ত করে গঠিত জাতীয় সরকার অপরিহার্য।
এছাড়াও বক্তব্য রাখেন সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী এসএফ ফরমানুল ইসলাম এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. সাবের আহমেদ চৌধুরী। তাঁরা বলেন, ভিন্নমত ও মতাদর্শকে একত্রিত করে একটি কার্যকর সরকার গঠন করা গেলে দেশের জনগণ প্রকৃত অর্থে লাভবান হবে।
এই নাগরিক মতবিনিময় সভা জাতীয় রাজনীতিতে এক নতুন আলোচনার সূত্রপাত করেছে। আলোচনার প্রতিটি পর্যায়ে বক্তারা শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও সম্মিলিত নেতৃত্বের ওপর গুরুত্বারোপ করেন, যা আগামী দিনের জন্য একটি ঐক্যবদ্ধ ও স্থিতিশীল বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখায়।