জাতীয় সংসদের জন্য ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে ২৩২ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন করেছে সংসদ সচিবালয় কমিশন। মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এই বাজেট অনুমোদিত হয়। সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে বাজেট অনুমোদনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সংসদ সচিবালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
কমিশনের এই বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমান, লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের সচিব ড. হাফিজ আহমেদ চৌধুরী এবং অর্থ বিভাগের সচিব ড. মো. খায়রুজ্জামান মজুমদার। বৈঠকে আলোচ্যসূচি উপস্থাপন করেন জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সচিব মো. মিজানুর রহমান।
২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের জন্য পূর্বে জাতীয় সংসদের বাজেট ধরা হয়েছিল ৩৪৭ কোটি ১৩ লাখ টাকা। তবে এই বাজেট সংশোধনের মাধ্যমে উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে আনা হয়েছে। সংশোধিত বাজেটে এই ব্যয় অর্ধেকের চেয়েও বেশি হ্রাস পেয়ে দাঁড়িয়েছে ১৫৪ কোটি ৪ লাখ ৫ হাজার টাকায়। সংসদ সচিবালয় জানিয়েছে, বর্তমানে সংসদ না থাকায় সংশোধিত বাজেটে ব্যয় কমানো সম্ভব হয়েছে।
এদিকে, ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে জাতীয় সংসদের পরিচালন ও উন্নয়ন খাতে মোট ২৩২ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে পরবর্তী দুই অর্থবছরের জন্য বাজেট প্রক্ষেপণও অনুমোদন করেছে কমিশন। এর মধ্যে ২০২৬-২০২৭ অর্থবছরে ২৪৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা এবং ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে ২৫৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকার বাজেট প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে।
সংসদ সচিবালয় কমিশনের এই সিদ্ধান্ত জাতীয় সংসদের কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। আগামী দিনের সাংবিধানিক কার্যক্রম ও প্রশাসনিক প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করে এই বাজেট পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বাজেটের এই কাঠামো বর্তমান আর্থিক বাস্তবতা এবং রাষ্ট্র পরিচালনার ধারাবাহিকতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। বিশেষত সংসদ না থাকার কারণে যেসব ব্যয় হ্রাস পেয়েছে, তা রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক সাশ্রয়ের একটি দৃষ্টান্ত হিসেবেও দেখা যেতে পারে। তবে পরবর্তী সময়ে সংসদ সচল হলে এই ব্যয় ধাপে ধাপে বাড়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।
এই বাজেট বাস্তবায়নের মাধ্যমে সংসদ সচিবালয় আশা করছে, সংসদীয় কার্যক্রম আরও সুসংগঠিত এবং কার্যকরভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি ভবিষ্যৎ বাজেট পরিকল্পনাগুলোর মাধ্যমে জাতীয় সংসদের প্রশাসনিক কাঠামো উন্নত ও যুগোপযোগী করে তোলার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
সব মিলিয়ে, জাতীয় সংসদের জন্য নির্ধারিত এই বাজেট কেবল একটি আর্থিক পরিকল্পনা নয়, বরং এটি রাষ্ট্র পরিচালনায় সংসদের ভূমিকার একটি স্পষ্ট প্রতিবিম্ব হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে।