বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যকার বহুল প্রতীক্ষিত তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু হচ্ছে বুধবার, ২৮ মে। সিরিজটি ঘিরে ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা থাকলেও, একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক এবার অনুপস্থিত থাকছে — ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম বা ডিআরএস। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)।
পিসিবি জানিয়েছে, এই সিরিজে ডিআরএস না থাকার মূল কারণ হলো টুর্নামেন্ট পরিচালনায় প্রয়োজনীয় কারিগরি কর্মীদের অনুপস্থিতি। টেকনিক্যাল স্টাফদের ঘাটতির কারণে ডিআরএস প্রযুক্তি ব্যবহার করা সম্ভব হবে না। এই সীমাবদ্ধতার কথা ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড ও দলের খেলোয়াড়দের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, এ সমস্যার কারণে চলতি বছরের পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল)-এর শেষ পর্বেও ডিআরএস ব্যবহার করা সম্ভব হয়নি।
ক্রিকেটে ডিআরএস বর্তমানে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি হিসেবে বিবেচিত হয়। এটি আম্পায়ারদের সিদ্ধান্তের পুনঃমূল্যায়ন করতে সহায়তা করে এবং অনেক সময় খেলায় ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ডিআরএস না থাকায় ম্যাচ চলাকালীন আম্পায়ারদের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হিসেবে বিবেচিত হবে, যা খেলোয়াড় ও দর্শকদের মাঝে বিতর্ক ও অসন্তোষের জন্ম দিতে পারে। বিশেষ করে টাইট ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচগুলোতে একটি ভুল সিদ্ধান্ত গোটা ম্যাচের গতিপথ পাল্টে দিতে পারে।
তিন ম্যাচের এই সিরিজটি অনুষ্ঠিত হবে পাকিস্তানের লাহোর শহরের ঐতিহাসিক গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে। প্রথম ম্যাচ ২৮ মে অনুষ্ঠিত হওয়ার পর, দ্বিতীয় ম্যাচ হবে ৩০ মে এবং তৃতীয় ও শেষ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে ১ জুন। সবগুলো ম্যাচই সন্ধ্যায় শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে। পাকিস্তানের ঘরের মাঠে খেলা হলেও বাংলাদেশ দল যথেষ্ট প্রস্তুতি নিয়ে সফরে এসেছে। নতুন ও তরুণ খেলোয়াড়দের নিয়ে গঠিত বাংলাদেশের দল এই সিরিজকে নিজেদের দক্ষতা প্রদর্শনের একটি বড় সুযোগ হিসেবে দেখছে।
এদিকে ডিআরএস না থাকায় কিছুটা হতাশা থাকলেও, উভয় দলই বিষয়টি মেনে নিয়ে খেলায় মনোযোগ দিতে চায়। খেলোয়াড়রা চাইছেন মাঠের খেলায় নিজেদের সেরাটা দিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে। ক্রিকেট বিশ্লেষকরাও বলছেন, প্রযুক্তির অভাব থাকলেও খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্সই শেষ পর্যন্ত ম্যাচের ফল নির্ধারণ করবে।
বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যকার এই সিরিজ শুধু প্রতিযোগিতামূলক খেলাই নয়, বরং দুই দেশের ক্রিকেটীয় সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করার একটি সুযোগ হিসেবেও দেখা হচ্ছে। দুই দলের সমর্থকরাও আশাবাদী যে, মাঠে হবে উত্তেজনাপূর্ণ ও জমজমাট ক্রিকেট — যদিও ডিআরএস না থাকাটা একটি বড় সীমাবদ্ধতা হিসেবেই রয়ে যাবে।
সব মিলিয়ে, ২৮ মে থেকে শুরু হতে যাওয়া এই সিরিজটি হবে প্রযুক্তির কিছু ঘাটতি সত্ত্বেও ক্রিকেটীয় প্রতিভা ও চেতনার এক চমৎকার প্রতিফলন। মাঠের প্রতিটি বল, প্রতিটি রান এবং প্রতিটি উইকেট তাই আরও বেশি তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠবে এই প্রযুক্তিবিহীন সিরিজে।