নয়া পল্টনে আয়োজিত এক মহাসমাবেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জোরালো কণ্ঠে ঘোষণা দেন, “দিল্লি নয়, পিন্ডি নয়, নয় অন্য কোনো দেশ—সবার আগে বাংলাদেশ।” লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এই বক্তব্য দেন তিনি। ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠা’ শীর্ষক এই কর্মসূচিতে তিনি বলেন, দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে অন্য কোনো রাষ্ট্রের প্রভাব নয়, বরং জনগণের ইচ্ছাই হতে হবে প্রধান নিয়ামক।
তারেক রহমান তার বক্তব্যে আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সন্দেহ ও শঙ্কার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “নির্বাচন নিয়ে ইতোমধ্যে টালবাহানা শুরু হয়েছে। কথিত কিছু সংস্কারকে সামনে রেখে দীর্ঘসূত্রতা সৃষ্টি করে ভিন্ন উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে।” তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, সংস্কারের নামে সময়ক্ষেপণের এই প্রবণতা একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের আড়ালে অন্য কোনো উদ্দেশ্যকে বাস্তবায়নের কৌশল হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রতিপক্ষ ভাবা উচিত নয়। বরং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান পুঁজি হওয়া উচিত নিরপেক্ষতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা।” জনগণের আস্থা অর্জন করতে হলে সরকারের উচিত হবে এমন কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া, যা দেশের মানুষের ভালোবাসা ও বিশ্বাস নষ্ট করতে পারে। তারেক রহমান দাবি করেন, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমেই দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব।
বক্তব্যে তারুণ্যের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, তরুণ প্রজন্মই দেশের ভবিষ্যৎ। তাদের অধিকার নিশ্চিত না হলে একটি প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়ে তোলা সম্ভব নয়। তাই এই কর্মসূচির মাধ্যমে তরুণদের রাজনীতিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান তিনি।
বিএনপির তিন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন—জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল—এই মহাসমাবেশের আয়োজন করে। ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট ও ফরিদপুর বিভাগের সমন্বয়ে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
মহাসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি মোনায়েম মুন্না। সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান ও ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলালী, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব প্রমুখ।
এই সমাবেশে নেতারা সবাই তরুণদের রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানান এবং একটি সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। তরুণদের রাজনীতিতে নতুন করে যুক্ত করার এবং তাঁদের নেতৃত্বে সমৃদ্ধ একটি বাংলাদেশ গঠনের প্রত্যয় এই সমাবেশে মুখরিত হয়ে ওঠে।