সম্প্রতি একটি আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন তাদের রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছে। এ উপলক্ষে দলটির একটি ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করে এই বিষয়ে তাদের অবস্থান তুলে ধরে। প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন দলটির আমির মাওলানা আবু জাফর কাসেমী।
রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও অন্যান্য কমিশনারদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে দলটি নিবন্ধন ফিরে পাওয়ার জন্য জোর দাবি জানায়। তারা বলেন, দেশের আদালত ইতোমধ্যে এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছে এবং সেই নির্দেশনার আলোকে নির্বাচন কমিশনের উচিত যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দলটি দীর্ঘদিন ধরে দেশের রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে আসছে। অতীতে তারা বিভিন্ন স্থানীয় সরকার নির্বাচনসহ জাতীয় নির্বাচনেও অংশ নিয়েছে। কিন্তু একটি প্রশাসনিক জটিলতার কারণে তাদের নিবন্ধন বাতিল হয়, যা দলটির রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনায় বড় ধরনের বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আদালতের রায়ের মাধ্যমে এই সমস্যার একটি সমাধানের দিক উন্মোচিত হয়েছে বলে তারা মনে করেন।
প্রতিনিধি দলের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, আসন্ন স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য নিবন্ধন ফিরে পাওয়া অত্যন্ত জরুরি। নিবন্ধন ছাড়া নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা যেমন কঠিন, তেমনি তা দলীয় প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ থেকেও দলটিকে বঞ্চিত করে। ফলে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের মৌলিক অধিকার থেকে তারা বঞ্চিত হচ্ছেন।
এ সময় নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে প্রতিনিধি দলকে আশ্বস্ত করা হয় যে, তারা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে। কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে যে নির্দেশনা পাওয়া যাবে, তার আলোকে তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। একই সঙ্গে দলটির জমাকৃত নথিপত্র যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
কমিশন আরও জানায়, সংবিধান ও নির্বাচনী বিধিমালার আলোকে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই তারা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। তবে নিবন্ধনের বিষয়টি পুনর্বিবেচনার সুযোগ রয়েছে এবং এ বিষয়ে কমিশন আন্তরিকভাবে বিবেচনা করছে।
বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের এই পদক্ষেপ রাজনৈতিক মহলে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, আদালতের রায়ের ভিত্তিতে নিবন্ধন ফিরে পাওয়া দলটির সাংগঠনিক কাঠামো ও কার্যক্রমে নতুন গতি আনতে পারে। একই সঙ্গে দেশের বহুদলীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় আরও একটি দলের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
সার্বিকভাবে, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নিবন্ধন পুনর্বহালের দাবি নির্বাচন কমিশনের বিবেচনায় এসেছে এবং সংশ্লিষ্ট আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে এ বিষয়ে শিগগিরই কোনো সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।