২০২৭ সালের এএফসি এশিয়ান কাপের (আয়োজক: সৌদি আরব) বাছাই পর্ব এবং ফিফা টায়ার-১ প্রীতি ম্যাচকে সামনে রেখে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের প্রস্তুতি এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে। এই দুই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে অংশ নিতে বাংলাদেশে এসেছেন ইংলিশ ক্লাব শেফিল্ড ইউনাইটেডে ধারে খেলা প্রবাসী ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হামজা চৌধুরী। সোমবার সকাল ১১টার দিকে একটি ফ্লাইটে তিনি ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন।
গত ২৫ মার্চ ভারতের শিলংয়ে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচে গোলশূন্য ড্র করেছিল বাংলাদেশ। সেই ম্যাচ দিয়েই লাল-সবুজের জার্সিতে অভিষেক হয় হামজার। এবার দেশের মাটিতে অভিষেকের অপেক্ষায় আছেন এই ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত বাংলাদেশি ফুটবলার। ভক্তদের মধ্যেও তার মাঠে নামা নিয়ে উন্মাদনার কমতি নেই।
বাংলাদেশের পরবর্তী দুই ম্যাচকে ঘিরে চলছে জোর প্রস্তুতি। আগামী ৪ জুন ফিফা টায়ার-১ প্রীতি ম্যাচে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও ভুটান। আর এরপর ১০ জুন ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুর। এই দুটি ম্যাচই বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচটি।
বাংলাদেশ দলের স্প্যানিশ কোচ হ্যাভিয়ের কাবরেরা এই দুই ম্যাচের জন্য ২৬ সদস্যের প্রাথমিক দল ঘোষণা করেছেন। দলে রয়েছে বেশ কিছু নতুন মুখ। হামজা চৌধুরীর পাশাপাশি প্রাথমিক দলে চমক হিসেবে জায়গা পেয়েছেন আরও দুই প্রবাসী ফুটবলার—ইতালিপ্রবাসী মিডফিল্ডার ফাহমিদুল ইসলাম এবং যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ফরোয়ার্ড শমিত সোম। এই তিন প্রবাসীর অন্তর্ভুক্তি নতুন আশা জাগিয়েছে সমর্থকদের মনে।
ক্যাম্প শুরু হয়েছে গত শনিবার থেকেই। ইতোমধ্যে জাতীয় দলের ক্যাম্পে যোগ দিয়েছেন ফাহমিদুল ইসলাম, যিনি গত বুধবার ঢাকায় এসেছেন। শমিত সোমের ঢাকায় আসার কথা রয়েছে ৪ মে বুধবার। সবকিছু ঠিক থাকলে ভুটানের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচেই তিন প্রবাসী ফুটবলারকে মাঠে দেখা যেতে পারে।
কোচ কাবরেরা চান, ভুটানের বিপক্ষে ম্যাচটিকে সিঙ্গাপুর ম্যাচের ড্রেস রিহার্সেল হিসেবে ব্যবহার করতে। বিশেষ করে হামজার অভিজ্ঞতা এবং ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডে তার শক্তিশালী উপস্থিতি দলকে ভারসাম্য এনে দিতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। বাংলাদেশের ফুটবলে নতুন জোয়ার আনতে পারে এই ম্যাচ দুটি, এমনটাই প্রত্যাশা ভক্তদের।
সব মিলিয়ে দেশের মাটিতে হামজা চৌধুরীর অভিষেক এবং আরও দুই প্রবাসী ফুটবলারের অন্তর্ভুক্তি বাংলাদেশের ফুটবলে নতুন উদ্দীপনার সৃষ্টি করেছে। ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য এই ম্যাচ দুটি ঘিরে ভক্ত-সমর্থকদের আগ্রহ এখন তুঙ্গে। বহুদিন পর জাতীয় দলের ম্যাচ নিয়ে এতটা উত্তেজনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এখন শুধু অপেক্ষা মাঠে পারফরম্যান্সের মাধ্যমে এই প্রত্যাশার প্রতিফলনের।