শিরোনাম:
শিরোনাম:
‘হ্যান্ড অব গড’ অনুকরণে নেইমার, মাঠ ছাড়লেন লাল কার্ড দেখে হামজা চৌধুরীর আগমন, ভুটান ও সিঙ্গাপুর ম্যাচ ঘিরে ভক্তদের চরম উত্তেজনা জুলাই সনদে ঐকমত্য, নির্বাচনের পথে অগ্রগতি নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বাজেটে ১২৫ কোটি টাকার বিশেষ তহবিলের প্রস্তাব ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট দিচ্ছেন অর্থ উপদেষ্টা বিশ্ব নেতৃত্বের মঞ্চে ট্রাম্পের দ্বিতীয় আবির্ভাব ব্যর্থ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রতিবেদন ভারতীয় মিডিয়ার চা-নাস্তা নয়, চাই বিচার-সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ চাই রাশেদ খাঁন নগদে অনিয়ম প্রধান উপদেষ্টার ব্যক্তিগত কর্মকর্তার স্ত্রীর বিতর্কিত নিয়োগ সোমবার শুরু হচ্ছে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে দ্বিতীয় দফার সংলাপ

বিশ্ব নেতৃত্বের মঞ্চে ট্রাম্পের দ্বিতীয় আবির্ভাব ব্যর্থ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
সময় : সোমবার, জুন ২, ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের শাসকগোষ্ঠীর এক অদ্ভুত মানসিকতা হলো—তারা শুধু নিজেদের দেশ নয়, পুরো বিশ্বকে শাসন করতে চায়। তাদের প্রত্যেক প্রেসিডেন্টই ভাবেন, তারা বিশ্বের ভাগ্য নির্ধারণ করবেন। এই ধারাবাহিকতায় ডোনাল্ড ট্রাম্পও ব্যতিক্রম নন। বরং অনেকেই মনে করেন, বিশ্ব রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টায় তিনি তার পূর্বসূরিদের চেয়েও এক ধাপ এগিয়ে। প্রথম মেয়াদে তিনি যেমন বিশ্ব রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেছিলেন, দ্বিতীয় মেয়াদে তার সেই উচ্চাকাঙ্ক্ষা যেন আরও বেড়েছে। তবে বাস্তবতা বলছে, এবার তিনি আগের মতো সুবিধাজনক অবস্থানে নেই।

 

যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নিয়েছেন ট্রাম্প। কিন্তু এবার আর আগের মতো দৃঢ়ভাবে আন্তর্জাতিক মঞ্চে প্রভাব বিস্তার করতে পারছেন না। অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে তিনি যতই টেক জায়ান্টদের নিয়ন্ত্রণে আনতে বা শিক্ষা ও বিচারব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ করতে সক্ষম হোন না কেন, বৈশ্বিক রাজনীতি এতটা সহজ নয়। বিশ্ব মোড়লদের নিয়ে কাজ করতে হলে প্রয়োজন কৌশল ও কূটনীতির সূক্ষ্মতা, যা এখনও ট্রাম্পের নীতিতে অনুপস্থিত।

 

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে মধ্যস্থতার উদ্যোগ নিয়েছেন ট্রাম্প। কিন্তু এই উদ্যোগে এখন পর্যন্ত কোনো দৃশ্যমান সফলতা আসেনি। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন স্পষ্টভাবে ট্রাম্পকে অবজ্ঞা করছেন। ট্রাম্পের প্রস্তাবকে গুরুত্ব না দিয়ে তাকে অপমানিতও করা হচ্ছে। রাশিয়ার প্রচারমাধ্যমগুলোতে ট্রাম্পকে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, তিনি বড় বড় কথা বললেও তার কথায় কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।

 

চীনের ক্ষেত্রেও ট্রাম্প একই রকম সমস্যায় পড়েছেন। প্রথম মেয়াদে বাণিজ্য যুদ্ধের মাধ্যমে চীনকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। শুল্ক আরোপ করে বেইজিংয়ের উপর চাপ সৃষ্টির কৌশল নিয়েছিলেন, ভাবতেন এতে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং নতিস্বীকার করবেন। কিন্তু চীনের কূটনীতি ও ধৈর্য যে আমেরিকান পন্থার চেয়ে অনেক বেশি সুসংগঠিত ও স্থিতিশীল—তা হয়তো ট্রাম্প বুঝতে পারেননি। তাই এখন যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ করছে, চীন আগের দেওয়া প্রতিশ্রুতি মানছে না।

 

শুধু চীন নয়, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ক্ষেত্রেও ট্রাম্পের শুল্কনীতি প্রত্যাশিত ফল দেয়নি। গণমাধ্যম তার এই কৌশলকে ব্যঙ্গ করে বলছে “টাকো ট্রেড” বা “ট্রাম্প অলওয়েজ চিকেনস আউট”, অর্থাৎ শেষ মুহূর্তে ট্রাম্প নিজেই সরে দাঁড়ান।

 

মধ্যপ্রাচ্যেও ট্রাম্পের উচ্চাশা ধাক্কা খাচ্ছে। প্রথম মেয়াদে তিনি ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রতি অসাধারণ সমর্থন জানিয়েছিলেন। কিন্তু এবার যখন তিনি মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছেন, তখন নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক স্বার্থের কারণে গাজা যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হচ্ছে। ট্রাম্পের ইচ্ছা ছিল ইরানের পরমাণু চুক্তি পুনর্বহাল করা, কিন্তু ইসরাইল এই চুক্তির ঘোর বিরোধী। ফলে এখানেও ট্রাম্পের অবস্থান হয়ে দাঁড়িয়েছে দ্বিধান্বিত।

 

প্রচারে ট্রাম্প বহুবার দাবি করেছেন, পুতিন ও শি জিনপিংয়ের সঙ্গে তার সুসম্পর্ক বিশ্ব সমস্যার সমাধানে সহায়ক হবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, এসব সম্পর্ক কাগুজে কথার চেয়ে বেশি কিছু নয়। রাশিয়া, চীন, ইসরাইল কিংবা ইউরোপ—সবখানেই ট্রাম্পকে এক প্রকার অবহেলা করা হচ্ছে। তাকে কেউ ভয় পায় না, বরং তার নীতি ও আচরণে তারা নিঃসংকোচ।

 

এখানে বিষয়টি পরিষ্কার—ট্রাম্প তার রাজনৈতিক কৌশলে বাস্তবতাকে যথাযথভাবে মূল্যায়ন করতে পারছেন না। এর আগে যেমন জর্জ ডব্লিউ বুশ বা বারাক ওবামা রাশিয়াকে আঞ্চলিক ক্ষয়িষ্ণু শক্তি হিসেবে মনে করতেন, তেমনি ট্রাম্পও ভেবেছেন তিনিই হবেন বিশ্ব ভাগ্যনিয়ন্ত্রক। কিন্তু ইতিহাসের বাস্তবতা বারবার প্রমাণ করেছে, কেবল বড় মুখে বা শক্তির দম্ভে বিশ্ব শাসন চলে না। এর জন্য প্রয়োজন গভীর কূটনৈতিক জ্ঞান, বাস্তবতা অনুধাবনের ক্ষমতা এবং নেতৃত্বের পরিপক্বতা।

 

চার মাস হয়েছে ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসেছেন। এর মধ্যেই তিনি শুল্কের হুমকি দিয়েছেন, কানাডা ও গ্রিনল্যান্ড দখলের কথা বলেছেন, মানবিক সহায়তা কর্মসূচি বাতিল করেছেন। কিন্তু তবুও রাশিয়া, চীন, ইসরাইল, ইউরোপ এবং কানাডার নেতারা তাকে খুব একটা গুরুত্ব দিচ্ছেন না। তাদের মতে, ট্রাম্প যতটা শক্তিশালী ভাবছেন নিজেকে, বাস্তবে তিনি ততটা নন।

 

এই কারণে কেউ তাকে অমান্য করলেও তার কোনো ‘মূল্য’ দিতে হয় না—এটাই হয়তো বর্তমান বৈশ্বিক নেতৃত্বে ট্রাম্পের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা।

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

Tags

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগ আদালতের রায় গণতন্ত্র গ্রেপ্তার ১২ চট্টগ্রাম চীন ছাত্র আন্দোলন জাতীয় ঐক্য জাতীয় নিরাপত্তা ড. ইউনূস ড. মুহাম্মদ ইউনূস তারেক রহমান ত্রিশাল দুর্নীতি নাহিদ ইসলাম নির্বাচন নির্বাচন কমিশন পাকিস্তান প্রধান উপদেষ্টা প্রশাসনিক সংস্কার ফিলিস্তিন বাংলাদেশ বাংলাদেশ অর্থনীতি বাংলাদেশ নির্বাচন বাংলাদেশ ফুটবল বাংলাদেশ রাজনীতি বিএনপি বিডা ভারত ময়মনসিংহ মানবাধিকার মুহাম্মদ ইউনূস রাজনীতি রাজনৈতিক দল রাজনৈতিক সংলাপ শিল্পায়ন শেখ হাসিনা সচিবালয় সিঙ্গাপুর বনাম বাংলাদেশ সিলেটে কারফিউর মধ্যেও থেমে নেই চিনি চোরাচালান সুশাসন সেনাবাহিনী ২ লাখ কোটি টাকা ছাড়াল খেলাপি ঋণের পরিমাণ

পুরাতন খবর

এক ক্লিকে বিভাগের খবর