শিরোনাম:
শিরোনাম:
নিম্নচাপের প্রভাবে সারাদেশে টানা বৃষ্টি, পাহাড়ি জেলাগুলোতে ভূমিধসের আশঙ্কা সিঙ্গাপুর ম্যাচ ঘিরে বাফুফে ও জাতীয় দলে উৎসবের আমেজ সুস্থ জাতি গঠনে পুষ্টি ও সচেতনতার গুরুত্ব – মাঠ নেই, পুষ্টি নেই, প্রতিরোধ ক্ষমতাও দুর্বল গণতন্ত্র, শান্তি ও মানবিক সংকট নিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বার্তা “দিল্লি নয়, পিন্ডি নয়, সবার আগে বাংলাদেশ: তারেক রহমানের তারুণ্য সমাবেশে দৃপ্ত ঘোষণা” শাপলার গণহত্যার সমর্থক শাহবাগীদেরও বিচার করতে হবে: হেফাজতে ইসলাম গাজায় ইসরায়েলি হামলায় সাংবাদিকের পরিবারের ৯ জন নিহত ডিআরএস ছাড়াই মাঠে গড়াচ্ছে বাংলাদেশ-পাকিস্তান টি-টোয়েন্টি সিরিজ মণিপুরে শক্তিশালী ভূমিকম্প ঢাকাসহ বাংলাদেশে কম্পন অনুভূত জুলাই ঐক্যের বিবৃতি আমলাতান্ত্রিক ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি

‘আমি যতদিন আছি দেশের অনিষ্ট হবে এমন কোনো কাজ হবে না’

মো : সবুজ মিয়া
সময় : সোমবার, মে ২৬, ২০২৫

‘দেশের স্বার্থবিরোধী কিছু হবে না, আমি যতদিন আছি, নিশ্চিন্ত থাকুন’ — প্রধান উপদেষ্টার দৃঢ় প্রতিশ্রুতি

বর্তমান দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট অত্যন্ত জটিল ও সংবেদনশীল। এমন এক সংকটকালীন মুহূর্তে প্রধান উপদেষ্টা জাতীয় রাজনৈতিক দলগুলোর নেতৃবৃন্দের সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে মিলিত হয়ে দেশের ভবিষ্যৎ, স্থিতিশীলতা ও সম্মিলিত রাজনৈতিক ঐক্যের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। তিনি তাঁর দৃঢ় মনোভাব ব্যক্ত করে বলেছেন, যতদিন তিনি দায়িত্বে আছেন, ততদিন দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে না এবং তিনি নিজে কোনো অবস্থাতেই দেশের ক্ষতি সাধনের অংশীদার হবেন না।

রবিবার (২৫ মে) রাতের ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা। বৈঠকের বিষয়বস্তু ছিল জাতির সামগ্রিক অগ্রগতি, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের পথনির্দেশনা। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বৈঠকের পর গণমাধ্যমকে অবহিত করেন যে, প্রধান উপদেষ্টা দেশের বর্তমান পরিস্থিতিকে ‘একটি বৃহৎ যুদ্ধাবস্থা’র সঙ্গে তুলনা করেছেন। তাঁর মতে, আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ার পর থেকে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে একধরনের অস্থিরতা ও ষড়যন্ত্রের আবহ তৈরি হয়েছে।

তিনি বলেন, “দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য ভিন্ন ভিন্ন কৌশলে প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। এ ধরনের পরিস্থিতি থেকে জাতিকে বাঁচাতে হবে। বিভক্তি ও বিদ্বেষের পথ থেকে সরে এসে আমাদের সবাইকে ঐক্যের পথে হাঁটতে হবে।” এই সংকটময় মুহূর্তে সবাইকে এক কাতারে দাঁড়িয়ে আত্মমর্যাদার ভিত্তিতে জাতিকে এগিয়ে নিতে হবে—এটাই তাঁর আহ্বান।

প্রধান উপদেষ্টা সবার উদ্দেশে বলেন, “আপনারা সবাই আজ একসঙ্গে এখানে উপস্থিত হয়েছেন, এটা আমার জন্য বড় সাহসের উৎস। আমি এই ঐক্যের মাঝে আশার আলো দেখি। যদি আমরা একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করতে না পারি, তাহলে আমি নিজেকে ব্যর্থ মনে করব।” তাঁর কণ্ঠে ছিল আত্মজিজ্ঞাসা ও আন্তরিকতা, যেন তিনি কেবল একজন প্রশাসনিক প্রধান নন, বরং দেশের একজন দায়বদ্ধ নাগরিক হিসেবেই বলছেন।

তিনি আরও বলেন, “আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের সামনে একটি ভিন্ন যুদ্ধের দরজা খুলে গেছে। এর প্রভাব শুধু দেশের অভ্যন্তরে নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও পড়ছে। আমাদের অগ্রযাত্রা ব্যাহত করতে, দেশের সকল কাঠামো ধ্বংস করে দিতে এবং আমাদের আবার পরনির্ভরতামূলক অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে নানা শক্তি সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এ যুদ্ধের প্রকৃতি আলাদা, তবে এর ভয়াবহতা কোনো অংশেই কম নয়।”

প্রধান উপদেষ্টা মনে করেন, সাম্প্রতিক অভ্যুত্থান দেশের জন্য এক অপ্রত্যাশিত সুযোগ এনে দিয়েছে। তিনি বলেন, “এই পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে আমরা এমন একটি সময়ের মুখোমুখি হয়েছি, যখন আমাদের ধ্বংসপ্রাপ্ত রাষ্ট্র কাঠামোকে পুনর্গঠনের সুযোগ এসেছে। এটা এমন একটি মুহূর্ত, যেখানে ইতিহাস আমাদের আহ্বান করছে—আমরা কী করি, সেই অনুযায়ী ভবিষ্যৎ রচিত হবে।” তাঁর মতে, যেহেতু পুরনো ব্যবস্থায় দেশে চলমান সংকট সমাধানের কোনো পথ খোলা ছিল না, তাই এই পরিবর্তন নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলে দিয়েছে।

তিনি স্বীকার করেন যে বর্তমান সময়ে দায়িত্ব পালন করা সহজ নয়। দেশব্যাপী বিভ্রান্তি, ভয়ের আবহ, আন্তর্জাতিক চাপে প্রতিনিয়ত সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে। কিন্তু তবুও তিনি আশাবাদী। তাঁর মতে, “যদি আমরা দলমত নির্বিশেষে জাতীয় স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হতে পারি, তাহলে কোনো শক্তিই আমাদের রুখে দিতে পারবে না। আমাদের সামনে যে চ্যালেঞ্জগুলো রয়েছে, সেগুলো মোকাবিলা করার জন্য আমাদের সম্মিলিত দায়িত্ববোধ জাগাতে হবে।”

বৈঠকে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “এখন দোষারোপ নয়, বরং সমঝোতা ও সম্মিলিত কর্মপরিকল্পনার সময়। আমাদের অতীতের ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নিতে হবে এবং ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে যেতে হবে। আমরা এমন একটি নির্বাচন আয়োজন করতে চাই, যা সত্যিকার অর্থে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাবে।”

তিনি বারবার উল্লেখ করেন, “আমি যতদিন দায়িত্বে আছি, নিশ্চিত থাকুন, দেশের কোনো অনিষ্ট হবে না। এই দায়িত্ব আমি শুধু একজন প্রশাসনিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে নিচ্ছি না—আমি একজন নাগরিক, একজন পিতা, একজন দেশপ্রেমিক হিসেবে এই প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।”

রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি তাঁর আহ্বান ছিল, তারা যেন সংকীর্ণ দলীয় চিন্তা থেকে বেরিয়ে এসে বৃহত্তর স্বার্থে কাজ করে। তিনি মনে করেন, রাজনীতি কোনো ব্যক্তিকেন্দ্রিক খেলা নয়—এটা জাতির জন্য, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য। তাঁর ভাষায়, “আমরা যদি এখন দায়িত্বশীল না হই, তাহলে ভবিষ্যত আমাদের ক্ষমা করবে না। এখনই সময়, একটি ঐক্যবদ্ধ উদ্যোগের মাধ্যমে দেশের হাল ধরার।”

বৈঠকের শেষভাগে তিনি বলেন, “আমরা হয়তো নানা মতের, নানা দলের প্রতিনিধি। কিন্তু এই দেশের মাটি আমাদের সবার। দেশের মঙ্গলের প্রশ্নে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এই দেশ যেন আর বিভক্তির পথে না হাঁটে, সেই প্রত্যাশাই আমার।”

এই বক্তব্যে স্পষ্ট যে প্রধান উপদেষ্টা কেবল প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছেন না; বরং তিনি গভীরভাবে উপলব্ধি করছেন যে, দেশের এই দুঃসময়ে দায়িত্বশীল নেতৃত্বের বিকল্প নেই। তিনি যেভাবে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনায় বসেছেন এবং জাতির সম্মিলিত প্রয়াসকে উৎসাহিত করছেন, তা নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক দৃষ্টান্ত। তাঁর প্রতিশ্রুতি ও অবস্থান এটাই নির্দেশ করে যে, যতদিন তিনি নেতৃত্বে থাকবেন, ততদিন দেশের স্বার্থ রক্ষায় আপসহীন থাকবেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

Tags

ChatGPT Icc T20 অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগ আপিল বিভাগে স্থগিত ইসরায়েলি হামলা উপদেষ্টা পরিষদ এইচএসসি কোটা আন্দোলন গণতন্ত্র গাজা গ্রেপ্তার ১২ চট্টগ্রাম চৌরাস্তা বাজার জাতীয় ঐক্য ড. ইউনূস ড. মুহাম্মদ ইউনূস তারেক রহমান ত্রিশাল নাহিদ ইসলাম নির্বাচন পাকিস্তান প্রধান উপদেষ্টা প্রশাসনিক সংস্কার প্রাথমিক বিদ্যালয় ফিলিস্তিন বাংলাদেশ বাংলাদেশ জাতীয় দল বাংলাদেশ রাজনীতি বিএনপি ভারত ময়মনসিংহ মানবতা মানবাধিকার মুসলিম উম্মাহ মুহাম্মদ ইউনূস রাজনীতি রাজনৈতিক দল শিল্পায়ন শেখ হাসিনা সচিবালয় সিলেটে কারফিউর মধ্যেও থেমে নেই চিনি চোরাচালান সেনাবাহিনী ২ লাখ কোটি টাকা ছাড়াল খেলাপি ঋণের পরিমাণ

পুরাতন খবর

এক ক্লিকে বিভাগের খবর