বাংলাদেশে কৃত্রিম উপগ্রহভিত্তিক ইন্টারনেট স্টারলিংকের জনপ্রিয়তা বাড়ার পাশাপাশি ব্রডব্যান্ড সংযোগের ব্যবহারও বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে মোবাইল ইন্টারনেটের গ্রাহকসংখ্যা ধারাবাহিকভাবে কমছে। একাধিক সিম ব্যবহার করা সত্ত্বেও মোবাইল সিমের সংযোগ সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) প্রকাশিত তথ্যানুযায়ী, ২০২৩ সালের মাঝামাঝি থেকে ২০২৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত সাত মাসে প্রায় ৯৪ লাখ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী এবং ১ কোটি ৩২ লাখ মোবাইল ইন্টারনেট গ্রাহক কমেছে।
বিটিআরসির সর্বশেষ (৬ মার্চ) পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০২৩ সালের জুন মাসে দেশে মোবাইল গ্রাহকসংখ্যা ছিল ১৯ কোটি ৬০ লাখ, যা ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে কমে ১৮ কোটি ৬৬ লাখে দাঁড়িয়েছে। একই সময়ে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ১২ কোটি ৯২ লাখ থেকে ১১ কোটি ৬০ লাখে নেমে এসেছে।
বর্তমানে দেশে মোবাইল ও ব্রডব্যান্ড মিলিয়ে ইন্টারনেট গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় ১৩ কোটি, যা গত বছরের জুনে ছিল ১৪ কোটি ২২ লাখ। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ক্ষেত্রে কিছুটা বৃদ্ধি লক্ষ করা গেছে, যার গ্রাহকসংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৪০ লাখে। দেশে প্রায় সাড়ে তিন হাজার আইএসপি প্রতিষ্ঠান ব্রডব্যান্ড সেবা দিচ্ছে, আর মোবাইল সেবায় রয়েছে তিনটি বেসরকারি অপারেটর ও একটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান।
গ্রামীণফোনের আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৪ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) তাদের সক্রিয় ডেটা ব্যবহারকারী ছিল ৪ কোটি ৯৩ লাখ, যা চতুর্থ প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) কমে ৪ কোটি ৮০ লাখে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া, গ্রাহকরা ব্যয়ও কমিয়েছে, যেখানে ২০২৩ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে গ্রাহকের মাসিক ব্যয় ছিল গড়ে ১৬১ টাকা, যা ২০২৪ সালের একই সময়ে ১৪৮ টাকায় নেমে এসেছে।
অন্যদিকে, রবি তাদের গ্রাহকপ্রতি মাসিক আয় ১৪৭ টাকা থেকে ১৪২ টাকায় নেমে আসার কথা জানিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির তথ্য অনুযায়ী, তাদের ফোরজি ডেটা ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২০২৩ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ছিল ৩ কোটি ৭৬ লাখ, যা চতুর্থ প্রান্তিকে কমে ৩ কোটি ৬৩ লাখ হয়েছে।
তবে বাংলালিংকের বার্ষিক আয় তুলনামূলকভাবে বেড়েছে। ২০২৩ অর্থবছরে তাদের রাজস্ব আগের বছরের তুলনায় ১৪.৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৬,১৫০ কোটি টাকায় পৌঁছেছে।
মোটকথা, বাংলাদেশে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার কমলেও ব্রডব্যান্ডের ব্যবহার ও নতুন প্রযুক্তির প্রতি আগ্রহ বাড়ছে।