বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) সিম নিবন্ধন সংক্রান্ত একটি নতুন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে, যা দেশের টেলিযোগাযোগ খাতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে। ২০২৫ সালের ২৪ মে, শনিবার বিটিআরসি সূত্রে জানা যায়, একজন গ্রাহকের নামে নিবন্ধনযোগ্য সিমের সর্বোচ্চ সীমা ১৫ থেকে কমিয়ে ১০টিতে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিটিআরসির এই নতুন সিদ্ধান্তের পেছনে রয়েছে আন্তর্জাতিক অনুশীলন অনুসরণ এবং জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের বর্তমান আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটও এই সিদ্ধান্ত গ্রহণে ভূমিকা রেখেছে। কমিশনের মতে, সিমের সংখ্যা সীমিত করার মাধ্যমে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধ, প্রতারণা হ্রাস এবং নিরাপদ ডিজিটাল পরিবেশ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
এ বিষয়ে বিটিআরসির এক কর্মকর্তা জানান, আগে একজন গ্রাহক একক জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ব্যবহার করে সর্বোচ্চ ১৫টি সিম নিবন্ধন করতে পারতেন। কিন্তু বর্তমানে নতুন নীতিমালার আওতায় একজন গ্রাহক সর্বোচ্চ ১০টি সিমই নিবন্ধন করতে পারবেন। এর ফলে প্রায় ২৬ লাখ গ্রাহকের মোট ৬৭ লাখ অতিরিক্ত সিম বন্ধ করে দিতে হবে বলে জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের অক্টোবরে প্রথমবারের মতো বিটিআরসি একজন গ্রাহকের নামে সর্বোচ্চ ১৫টি সিম নিবন্ধনের সীমা নির্ধারণ করে। পরবর্তীতে, ২০২২ সালের অক্টোবরে একটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়, যেসব গ্রাহকের নামে ১৫টির বেশি সিম রয়েছে, তাদেরকে পছন্দ অনুযায়ী ১৫টি সিম রেখে অতিরিক্ত সিম ডিরেজিস্টার করার আহ্বান জানানো হয়। এমনকি বিটিআরসি তখন লটারি পদ্ধতির মাধ্যমে ১৫টির বেশি সিম থাকা গ্রাহকদের অতিরিক্ত সিম বন্ধ করে দেয়।
এই নতুন সীমা কার্যকর হলে দেশের টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থায় একটি সুস্পষ্ট শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সিম ব্যবহারে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি এটি বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে ব্যবহৃত সিম চিহ্নিত ও নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হবে। একইসঙ্গে, টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠানগুলোর সেবার মান উন্নয়নের দিকেও এই সিদ্ধান্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
সবশেষে বলা যায়, বিটিআরসির এই পদক্ষেপ ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিতের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি। সাধারণ গ্রাহকদের সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে পারলেই, তা দেশের টেলিযোগাযোগ খাতকে আরও নিরাপদ ও কার্যকর করে তুলবে।