অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগামী বছরের ৩০ জুনের পর আর একদিনও ক্ষমতায় থাকবেন না বলে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। এই ঘোষণা দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে তাৎপর্যপূর্ণ একটি বার্তা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টার এই বক্তব্য মূলত একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যেই একটি গ্রহণযোগ্য, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি রক্ষা এবং জনগণের আস্থা অর্জনের ইঙ্গিত বহন করে।
রোববার রাতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এই তথ্য গণমাধ্যমকে জানান। সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রেস সচিব বলেন, ড. ইউনূস অত্যন্ত স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন যে, আগামী বছরের ৩০ জুনের পর তিনি আর একদিনও প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্বে থাকবেন না। এই বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি ক্ষমতা গ্রহণের উদ্দেশ্য এবং সময়সীমা সম্পর্কে জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোকে আশ্বস্ত করেছেন।
প্রেস সচিব আরও জানান, ড. ইউনূস বলেছেন, “সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে আমি নিজেকে অপরাধী বোধ করবো।” এই বক্তব্যে একজন দায়িত্বশীল ও নৈতিকতাবোধসম্পন্ন নেতার প্রতিচ্ছবি পাওয়া যায়, যিনি দেশের গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা রক্ষা এবং জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করাকেই নিজের প্রধান কর্তব্য হিসেবে দেখছেন।
এদিন সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবি পার্টি, ইসলামী আন্দোলন, খেলাফত মজলিসসহ বেশ কয়েকটি ইসলামি রাজনৈতিক দল, গণঅধিকার পরিষদ, গণতন্ত্র মঞ্চভুক্ত বিভিন্ন দল যেমন ওয়ার্কার্স পার্টি, নাগরিক ঐক্য, জাসদ (রব), গণসংহতি আন্দোলন এবং সিপিবির নেতারা। এই বৈঠকগুলো অন্তর্বর্তী সরকারের একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সব দলের সঙ্গে আলোচনানির্ভর কর্মকৌশলের ইঙ্গিত দেয়।
ড. ইউনূসের এমন বক্তব্য দেশবাসীর মধ্যে একটি ইতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। তিনি নির্বাচনের মাধ্যমে একটি নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এতে রাজনৈতিক অস্থিরতা কমানোর পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের সম্ভাবনা আরও জোরালো হচ্ছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার এই স্পষ্ট বক্তব্য দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হিসেবে বিবেচিত হবে। তিনি সময়সীমার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে তার দায়িত্ব পালনের অঙ্গীকার করেছেন, যা দেশের গণতন্ত্রের জন্য একটি আশার আলো হিসেবে দেখা যাচ্ছে।