ইংলিশ ফুটবলের প্রতিভাবান ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হামজা চৌধুরীর জন্য সময়টা ভালো যাচ্ছে না। তার মূল ক্লাব লিস্টার সিটি ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় স্তরের লিগ, দ্য চ্যাম্পিয়নশিপে নেমে যাওয়ায় তিনি নতুন আশ্রয় খুঁজে নিয়েছিলেন শেফিল্ড ইউনাইটেডে, ধারে। সেখানে গিয়েও ভাগ্য বদলায়নি এই বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফুটবলারের। কারণ, শেফিল্ড ইউনাইটেডও আগামী মৌসুমে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে জায়গা করে নিতে ব্যর্থ হয়েছে।
চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে সরাসরি প্রিমিয়ার লিগে ওঠার সুযোগ হাতছাড়া হওয়ার পর শেফিল্ডের সামনে ছিল শেষ সুযোগ—প্লে অফ ফাইনাল। ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ ছিল সান্ডারল্যান্ড। ম্যাচের ২৫তম মিনিটে টাইরেস ক্যাম্পবেলের গোলে এগিয়ে যায় শেফিল্ড। ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে তখন উচ্ছ্বাসের জোয়ার। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে চিত্রটা পাল্টে যায়। ৭৬ মিনিটে সান্ডারল্যান্ডের এলিজার মায়েন্ডা গোল করে ম্যাচে সমতা আনেন। অতিরিক্ত যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিটে টম ওয়াটসনের গোল শেফিল্ড ইউনাইটেডের সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দেয়। ম্যাচ শেষে হতাশায় ডুবে যায় শেফিল্ডের খেলোয়াড় ও কোচিং স্টাফ। চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি হামজাও।
এই হারে শুধু একটি ম্যাচ হারেনি শেফিল্ড, হারিয়েছে পুরো একটি মৌসুমের প্রত্যাশা ও পরিকল্পনা। আর হামজা চৌধুরীর জন্য এ হার যেন আরও বেশি যন্ত্রণাদায়ক, কারণ এতে করে তার প্রিমিয়ার লিগে ফেরার সম্ভাবনাও নিভে গেছে। যদি গ্রীষ্মকালীন দলবদলে নতুন কোনো প্রিমিয়ার লিগ ক্লাবে সুযোগ না পান, তাহলে আগামী মৌসুমেও তাকে চ্যাম্পিয়নশিপেই খেলা চালিয়ে যেতে হবে।
তবে হতাশা পেছনে ফেলে নতুন চ্যালেঞ্জের জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন হামজা। ২ জুন তিনি ঢাকায় আসছেন সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ খেলতে। ১০ জুন ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে সিঙ্গাপুরের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ জাতীয় দল। এ ম্যাচ দিয়ে দেশের মাটিতে প্রথমবারের মতো জাতীয় দলের জার্সি গায়ে চাপাবেন হামজা চৌধুরী। ফুটবলপ্রেমীদের জন্য এটি এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত হতে চলেছে।
শেফিল্ড ইউনাইটেড প্লে অফের সেমিফাইনালে ব্রিস্টল সিটিকে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছিল। অন্যদিকে, সান্ডারল্যান্ড কভেন্ট্রিকে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করে। ফাইনালে জয় পাওয়ায় লিডস ইউনাইটেড ও বার্নলির পর তৃতীয় দল হিসেবে প্রিমিয়ার লিগে উঠেছে সান্ডারল্যান্ড। ২০১৭ সালের পর এবারই প্রথম ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ পর্যায়ের এই লিগে ফিরে আসলো দলটি।
হামজার জন্য এটি হতাশার এক অধ্যায় হলেও, তার সামনে জাতীয় দলের হয়ে গৌরব অর্জনের এক বড় সুযোগ অপেক্ষা করছে। নিজ দেশের মাটিতে দর্শকদের সামনে প্রথমবার মাঠে নামা তাকে নতুন অনুপ্রেরণা জোগাবে—এমনটাই প্রত্যাশা দেশের ফুটবলপ্রেমীদের।