আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে যখন সারাদেশে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে, তখন দেশের তৈরি পোশাক শিল্পের স্বার্থে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পোশাক শিল্প সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর রপ্তানি বিল নগদায়ন ও শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন, বোনাস এবং অন্যান্য ভাতা পরিশোধ নিশ্চিত করতে নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় ব্যাংকের কিছু শাখা খোলা রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক আজ রোববার এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে জানায়, তৈরি পোশাকশিল্প কেন্দ্রিক এলাকা যেমন—ঢাকা মহানগরী, আশুলিয়া, টঙ্গী, গাজীপুর, সাভার, ভালুকা, নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামে অবস্থিত তফসিলি ব্যাংকের নির্দিষ্ট শাখাগুলো ৫ জুন খোলা থাকবে। এদিন সরকারি ছুটির মধ্যেও এসব শাখায় সীমিত সংখ্যক জনবল দিয়ে সীমিত পরিসরে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, ঈদের পরের সরকারি ছুটির দিনগুলোতেও—অর্থাৎ ১১ ও ১২ জুন—সীমিত পরিসরে ব্যাংক খোলা থাকবে। এ সময় ব্যাংক খোলা রাখার পেছনে মূল উদ্দেশ্য হলো আমদানি-রপ্তানি খাত, বিশেষ করে ওষুধ শিল্প খাতসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ শিল্পখাতের আন্তর্জাতিক লেনদেন সচল রাখা এবং গ্রাহকদের জরুরি ব্যাংকিং সেবা নিশ্চিত করা।
ঐ দিনগুলোতে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক এলাকায় অবস্থিত অথরাইজড ডিলার (এডি) শাখাগুলো খোলা রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এসব শাখা কোন কোন এলাকায় খোলা থাকবে, তা সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলো নিজেদের বিবেচনায় নির্ধারণ করবে।
ব্যাংকিং কার্যক্রমের সময়সূচি অনুযায়ী, উল্লিখিত তিন দিনে—৫, ১১ ও ১২ জুন—ব্যাংকে লেনদেন চলবে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত। তবে ব্যাংকের শাখাগুলো খোলা থাকবে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। এই সময়সীমার মধ্যে গ্রাহকরা প্রয়োজনীয় সেবা নিতে পারবেন।
বাংলাদেশের পোশাক খাত দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। ঈদ উপলক্ষে লাখ লাখ শ্রমিকের বেতন-বোনাস প্রদান একটি বিশাল আর্থিক প্রক্রিয়া। এ জন্য সময়মতো ব্যাংকিং সুবিধা পাওয়া অত্যন্ত জরুরি। বাংলাদেশ ব্যাংকের এই সিদ্ধান্ত শ্রমিকদের মধ্যে স্বস্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এবং মালিকপক্ষকে তাদের আর্থিক দায়িত্ব পালন করতে সাহায্য করবে।
সার্বিকভাবে এই উদ্যোগ দেশের অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোকে সচল রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে এবং ঈদের উৎসবমুখর পরিবেশে কোনো প্রকার আর্থিক অনিশ্চয়তা তৈরি হবে না বলে আশা করা যায়।