চট্টগ্রামের স্বাস্থ্যখাতে যুগান্তকারী পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে হাটহাজারী ও কর্ণফুলী এলাকায় দুটি নতুন হাসপাতাল নির্মাণের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। একই সঙ্গে, নগরীর কালুরঘাট এলাকায় একটি ডেন্টাল কলেজ ও ডেন্টাল হাসপাতাল স্থাপনের পরিকল্পনাও গ্রহণ করা হয়েছে।
বুধবার চট্টগ্রামের সার্কিট হাউজে “চট্টগ্রাম মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন এবং অক্সিজেন-হাটহাজারী মহাসড়কের উন্নয়ন” শীর্ষক মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা জানান তিনি। সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস, শিক্ষা উপদেষ্টা সি. আর আবরার, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক–ই–আজম, প্রধান উপদেষ্টার স্পেশাল এনভয় লুৎফে সিদ্দিকী, বিডা’র প্রতিনিধি চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন এবং এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদসহ আরও অনেকে।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেন, “আমি নিজে চট্টগ্রামের হাসপাতাল পরিদর্শন করেছি। সেখানে দেখেছি, ২২০০ ধারণক্ষমতার হাসপাতালে প্রায় ৫ হাজার রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। ব্রেইন সার্জারির মতো জটিল রোগীদের পর্যন্ত ফ্লোরে শুয়ে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। এমনকি, টয়লেটের পাশেও রোগীদের অবস্থান করতে হচ্ছে। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং অবিলম্বে এর সমাধান প্রয়োজন।”
এই সংকট নিরসনে হাটহাজারী ও কর্ণফুলী এলাকায় দুটি নতুন হাসপাতাল নির্মাণের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান। হাটহাজারীর হাসপাতালটি রাঙামাটি-কাপ্তাই ও আশেপাশের অঞ্চলের রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা সহজলভ্য করবে। অন্যদিকে, কর্ণফুলী এলাকায় নির্মিতব্য হাসপাতালটি পটিয়া, সাতকানিয়া ও চন্দনাইশ অঞ্চলের জনগণকে উন্নত চিকিৎসাসেবা প্রদান করবে।
তিনি আরও বলেন, “চট্টগ্রামের মতো বৃহৎ ও গুরুত্বপূর্ণ নগরীতে এখনও কোনো ডেন্টাল কলেজ বা ডেন্টাল হাসপাতাল নেই, যা অত্যন্ত বিস্ময়কর। তাই, কালুরঘাট এলাকায় একটি আধুনিক ডেন্টাল কলেজ ও হাসপাতাল নির্মাণের পরিকল্পনাও হাতে নেয়া হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানটি দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের মৌলিক ও উন্নত দন্তচিকিৎসা নিশ্চিত করবে।”
উক্ত মতবিনিময় সভায় চট্টগ্রামের পরিবেশ, অবকাঠামো উন্নয়ন ও জনসাধারণের জীবনমান উন্নয়নের বিভিন্ন দিক নিয়েও আলোচনা হয়। বক্তারা জানান, এসব উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে চট্টগ্রামবাসীর জীবনযাত্রার মান বহুগুণে উন্নত হবে এবং স্বাস্থ্যখাতে একটি নতুন যুগের সূচনা ঘটবে।
সার্বিকভাবে, এই উদ্যোগগুলো চট্টগ্রাম তথা বাংলাদেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থার বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন অংশগ্রহণকারীরা।