আসন্ন ঈদুল আযহাকে কেন্দ্র করে কোরবানির পশুর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও ডেঙ্গু মশা নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব প্রদান সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে কিছু বক্তব্য ও প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এসব বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।
মঙ্গলবার (২৭ মে) আইএসপিআর থেকে প্রকাশিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক গণমাধ্যমে এক বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন যে, আসন্ন ঈদুল আযহায় পশুর বর্জ্য অপসারণ এবং ডেঙ্গু মশা নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব দেওয়া হবে। তবে এ বিষয়ে সেনাবাহিনী সম্পূর্ণভাবে অনবগত এবং তারা এ ধরনের কোনো কার্যক্রমে নিযুক্ত হয়নি।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা, অভ্যন্তরীণ ও সীমান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণসহ বিভিন্ন জাতীয় সংকটে সহায়তা প্রদান করে থাকে। তবে সিটি কর্পোরেশন বা স্থানীয় সরকার কর্তৃক পরিচালিত সুনির্দিষ্ট সেবা কার্যক্রম, যেমন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বা মশা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট ও উপযুক্ত সিভিল প্রশাসন ও সংস্থার মাধ্যমেই সম্পাদন করা উচিত বলে সেনাবাহিনীর অভিমত।
আইএসপিআর উল্লেখ করে, সেনাবাহিনী দেশের স্বার্থে, প্রয়োজনে ও জরুরি পরিস্থিতিতে সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক দায়িত্ব পালন করে থাকে। কিন্তু পূর্বনির্ধারিত কোনো পরিকল্পনা ছাড়াই সেনাবাহিনীর নাম ব্যবহার বা দায়ভার চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা বিভ্রান্তিকর এবং অনভিপ্রেত।
সেনাবাহিনী আরও জানায়, বর্তমানে তারা জাতীয় নিরাপত্তা, আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ত্রাণ ও উদ্ধার কার্যক্রমসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছে। এই ব্যস্ততার মাঝে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের দৈনন্দিন নাগরিক সেবা কার্যক্রমে সেনাবাহিনীকে যুক্ত করা বাস্তবসম্মত নয়।
এছাড়া, কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ এবং ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার অংশ হওয়া উচিত। এতে স্থানীয় সরকার, স্বাস্থ্য বিভাগ, পরিচ্ছন্নতা কর্মী এবং জনগণের সম্মিলিত অংশগ্রহণ প্রয়োজন। সেনাবাহিনী মনে করে, এই কাজগুলো যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমেই দক্ষতার সাথে সম্পাদিত হওয়া সম্ভব।
আইএসপিআরের বিবৃতিতে সর্বশেষ বলা হয়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সব সময় রাষ্ট্র ও জনগণের স্বার্থে কাজ করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। তবে তারা এমন কোনো কর্মকাণ্ডে যুক্ত হবে না যা তাদের মূল দায়িত্ব ও কাঠামোর বাইরে পড়ে।
এই প্রসঙ্গে সংশ্লিষ্ট মহলের মধ্যে সমন্বয় ও স্পষ্টতা থাকা অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করছে সেনাবাহিনী। ভবিষ্যতে এ ধরনের তথ্য প্রকাশ বা মন্তব্যের আগে যথাযথভাবে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা ও নিশ্চিত হওয়ার আহ্বান জানানো হয় আইএসপিআরের পক্ষ থেকে।