শারজার মাটিতে ফরম্যাট মিলিয়ে ১১ ম্যাচে বাংলাদেশের জয় মাত্র একবার। বহুবার চেষ্টা করেও কাঙ্ক্ষিত সাফল্য ধরা দেয়নি। অবশেষে গত বছর আফগানিস্তানের বিপক্ষে নবম চেষ্টায় ওয়ানডে সংস্করণে সেই জয় তুলে নেয় লাল-সবুজের দল। তবে টি-টোয়েন্টিতে এখনও সেই অপেক্ষা দীর্ঘ। এবার সেই গ্লানি ঘোচানোর মিশনে নামছে বাংলাদেশ, প্রতিপক্ষ স্বাগতিক সংযুক্ত আরব আমিরাত। এই ম্যাচ দিয়েই পূর্ণকালীন অধিনায়ক হিসেবে নিজের অধ্যায় শুরু করবেন লিটন দাস। যদিও এর আগেও কয়েক দফায় ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক ছিলেন তিনি, তবে এবার থাকছেন সম্পূর্ণ স্বাধীনতায়।
আজ রাত ৯টায় শারজা ক্রিকেট গ্রাউন্ডে দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। ১৪৬ দিনের বিরতির পর মাঠে নামতে যাচ্ছে টাইগাররা, প্রতিপক্ষ যদিও তুলনামূলকভাবে দুর্বল। এখন পর্যন্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে তিনটি টি-টোয়েন্টি খেলে সবকটিতেই জিতেছে বাংলাদেশ। সর্বশেষ ২০২২ সালের সিরিজেও হোয়াইটওয়াশ করেছিল তারা।
এই সিরিজ দিয়েই শুরু হচ্ছে ‘নতুন’ বাংলাদেশের যাত্রা। সদ্য বিদায়ী অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর পরিবর্তে এবার নেতৃত্বের ভার লিটনের কাঁধে। এতে করে ব্যাটিং অর্ডারেও আসছে পরিবর্তন। তিন নম্বরে খেলবেন লিটন, ওপেনিংয়ে দেখা যেতে পারে তানজিদ তামিমের সঙ্গে শান্ত বা সৌম্য সরকারকে। মিডল অর্ডারে থাকবে তাওহিদ হৃদয় ও জাকের আলি। শান্ত ওপেনিংয়ে না খেললে তাকে দেখা যেতে পারে মিডল অর্ডারে। লোয়ার মিডল অর্ডারে শামীম পাটোয়ারির সঙ্গে দলকে এগিয়ে নিতে প্রস্তুত শেখ মাহেদি ও সহ-অধিনায়ক রিশাদ হোসেন।
বোলিং বিভাগেও থাকছে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুযোগ। পেস আক্রমণে নেতৃত্ব দেবেন মোস্তাফিজুর রহমান, সঙ্গে থাকবেন শরিফুল ইসলাম ও তানজিম সাকিব। স্কোয়াডে থাকা নাহিদ রানা ও হাসান মাহমুদের মাধ্যমেও ঘূর্ণায়মান পেস আক্রমণ তৈরি করতে পারে বাংলাদেশ। স্পিনে ভরসা থাকবে রিশাদ ও মাহেদির ওপর। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি স্পিন আক্রমণেও সেরাটা চায় টিম ম্যানেজমেন্ট।
অন্যদিকে, ১৪৩ দিন পর টি-টোয়েন্টিতে ফিরছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। সাম্প্রতিক সময়ে ওয়ানডেতে ভালো ফর্মে থাকলেও টি-টোয়েন্টিতে দলটি অনভিজ্ঞ। স্কোয়াডে পাঁচ নতুন মুখ, নেই অভিজ্ঞ পেসার জুনায়েদ সিদ্দিকি। ব্যাটিং ভরসা অধিনায়ক মোহাম্মদ ওয়াসিম, যিনি নিজেই এখন রানের জন্য লড়ছেন।
তবে অভিজ্ঞতায় যতই পার্থক্য থাকুক, শারজার উইকেট বরাবরই ব্যাটারদের অনুকূলে। ছোট বাউন্ডারি ও দ্রুত আউটফিল্ডে ১৭০-১৮০ রান তুলতে পারলে যে কোনো দলই সুবিধাজনক অবস্থানে পৌঁছে যায়। এই উইকেট ও কন্ডিশনের সঙ্গে পরিচিত বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা এবার সেই অভিজ্ঞতা কতটা কাজে লাগাতে পারে, সেটাই দেখার অপেক্ষা।
সিরিজ শুরুর আগেই স্পষ্ট, লিটনের নেতৃত্বে নতুন প্রত্যয়ের বাংলাদেশ মাঠে নামছে শুধুই জয় নয়, ভবিষ্যতের জন্য দল গঠনের লক্ষ্য নিয়েই। শারজার ব্যাটিং স্বর্গে অতীত গ্লানি ভুলে এবার জয়ের হাসিই হতে পারে নতুন কাপ্তানের অভিষেক উদযাপন।