রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা ডিএমপির
সম্প্রতি উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে রাজধানী ঢাকার কিছু নির্দিষ্ট এলাকায় সভা, সমাবেশ ও বিক্ষোভ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। ১৫ মে বৃহস্পতিবার বিকেলে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগ থেকে পাঠানো এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার স্বার্থে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অর্ডিন্যান্স (অর্ডিন্যান্স নং-III/৭৬) এর ২৯ ধারা অনুযায়ী এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এতে বলা হয়, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত রাজধানীর বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থানকে সভা-সমাবেশ ও বিক্ষোভ থেকে বিরত রাখতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
নিষিদ্ধ এলাকার তালিকা
ডিএমপি যে এলাকাগুলোর কথা উল্লেখ করেছে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে:
উক্ত এলাকাগুলোতে সকল প্রকার সভা, সমাবেশ, মিছিল, শোভাযাত্রা এবং যেকোনো ধরনের বিক্ষোভ কর্মসূচি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
পথ অবরোধ না করার অনুরোধ
গণবিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, বিভিন্ন দাবিদাওয়া আদায় বা প্রতিবাদের উদ্দেশ্যে সড়ক অবরোধ করে যান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি না করতে সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। যখন-তখন রাস্তায় নামা এবং যানবাহন চলাচল ব্যাহত হলে জনদুর্ভোগ তৈরি হয়—এই বাস্তবতাকে মাথায় রেখেই এমন নির্দেশনা জারি করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে ডিএমপির পক্ষ থেকে।
উদ্দেশ্য ও প্রেক্ষাপট
বর্তমান সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে অনেক সময় হঠাৎ করে বিভিন্ন গোষ্ঠী রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে থাকে। এতে বিচারিক কার্যক্রম, প্রশাসনিক কাজকর্ম এবং সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন চলাফেরায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। বিশেষত, সুপ্রিম কোর্ট এলাকা ও সংশ্লিষ্ট ভবনসমূহের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও সুশৃঙ্খল পরিবেশ বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ কারণেই সংশ্লিষ্ট এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
আইনি ভিত্তি
ডিএমপি যে আইনের আওতায় এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে তা হলো ১৯৭৬ সালের ‘ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অর্ডিন্যান্স’। এর ২৯ নম্বর ধারা অনুযায়ী, জনশৃঙ্খলা বা জননিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশ কমিশনার নির্দিষ্ট এলাকায় জনসমাগম বা কর্মসূচির ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারেন। এই ধারার অধীনেই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়েছে।
সকল পক্ষের প্রতি আহ্বান
ডিএমপি তাদের বিজ্ঞপ্তিতে সকল পক্ষকে দায়িত্বশীল আচরণ করার আহ্বান জানিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, জনগণের নিরাপত্তা এবং চলাচলে স্বাভাবিকতা বজায় রাখার স্বার্থে কেউ যেন নিষিদ্ধ এলাকায় কোনো ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ না করেন, সেজন্য সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।
সাময়িক হলেও কার্যকর ব্যবস্থা
এ নিষেধাজ্ঞা সাময়িক হলেও কার্যকর বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। কারণ সুপ্রিম কোর্ট ও সংশ্লিষ্ট বিচারিক ভবনগুলো দেশের বিচারব্যবস্থার কেন্দ্রবিন্দু। এখানে অবাধ চলাচল, অযাচিত বিক্ষোভ কিংবা নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা থাকলে তা পুরো বিচার প্রক্রিয়াকেই ব্যাহত করতে পারে।
পরবর্তী নির্দেশনা পর্যন্ত বলবৎ
এই নিষেধাজ্ঞা বৃহস্পতিবার (১৫ মে) থেকেই কার্যকর হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত তা বলবৎ থাকবে। কবে এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হবে তা এখনো নির্ধারণ করা হয়।