বিএনপির সঙ্গে হেফাজতে ইসলামের বৈঠক, নির্বাচন ও বিচার নিয়ে ঐকমত্য
শনিবার রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নেতাদের সঙ্গে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকটি রাত ৮টা থেকে শুরু হয়ে চলে প্রায় এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। হেফাজতের পক্ষ থেকে নেতৃত্ব দেন মহাসচিব মাওলানা সাজেদুর রহমান, তার সঙ্গে ছিলেন ড. আহমদ আবদুল কাদের, মাওলানা মহিউদ্দিন রব্বানী, মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, মুফতি মনির হোসাইন কাসেমীসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
বৈঠকে উভয়পক্ষ দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন এবং হেফাজতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলাসহ নানা ইস্যুতে আলোচনা করেন। ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে একসাথে কাজ করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে তারা বলেন, অতীতের নিপীড়ন ও মিথ্যা মামলার অবসান হওয়া উচিত।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের জানান, দেশের গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও নির্বাচন দ্রুত আয়োজনের বিষয়ে তারা ঐকমত্যে পৌঁছেছেন। ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে একটি সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানান তিনি, যা প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মাধ্যমে নিশ্চিত করতে চান। এ বিষয়ে হেফাজত একমত প্রকাশ করেছে এবং নিজেদের করণীয় নিয়েও ভাববে বলে জানিয়েছে।
হেফাজতের পক্ষ থেকে ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে সংঘটিত ঘটনার বিচার দাবি করা হয়। সেই সময় ও পরবর্তী বছরগুলোতে যেসব আলেম-উলামাদের ওপর নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে, সেগুলোর দ্রুত বিচার ও মামলার নিষ্পত্তি চায় তারা। বিএনপিও তাদের এ দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে।
বিএনপি নেতারা বলেন, যারা অতীতে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে, বিশেষ করে আওয়ামী লীগের যেসব নেতাকর্মী গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত, তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। এ জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কার্যকারিতা বাড়াতে বিভিন্ন প্রস্তাবনা উত্থাপন করেন তারা—যেমন ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা বৃদ্ধি, তদন্ত ও প্রসিকিউশন টিমের সক্ষমতা বাড়ানো এবং বিভাগীয় পর্যায়ে ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা বিবেচনা করা।
হেফাজতের পক্ষ থেকে সংবিধানে ‘আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাস’ পুনঃস্থাপনের দাবিও উত্থাপন করা হয় বৈঠকে।