শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় আশিয়ান মেডিকেল কলেজ মাঠে আয়োজিত দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে আশিয়ান গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম ভূঁইয়া প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন।

বক্তব্যে তিনি বলেন, শহীদ জিয়াউর রহমানই প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি। তার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে দেশ একদলীয় শাসন থেকে মুক্তি পায় এবং জনগণ স্বপ্ন দেখতে শুরু করে একটি স্বনির্ভর, আত্মমর্যাদাশীল বাংলাদেশের। তিনি শুধু একজন রাষ্ট্রনায়ক ছিলেন না, ছিলেন সাধারণ মানুষের আশার আলো। ১৯৮১ সালের ৩০ মে কিছু বিপথগামী সেনা সদস্যের গুলিতে তার শাহাদাত বরণ শুধু একটি নেতার হত্যাই নয়, বরং বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার উপর আঘাত ছিল। সেই দিন থেকেই দেশের মানুষ পরাধীনতার শৃঙ্খলে জড়াতে থাকে ভারতের প্রভাবাধীন নীতির অধীন হয়ে।

নজরুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, শহীদ জিয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে বহু আন্দোলন-সংগ্রাম, ত্যাগ-তিতিক্ষা পেরিয়ে আজ আমরা দাঁড়িয়েছি এক নতুন প্রত্যয়ের মুখোমুখি। হাজারো ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগের বিনিময়ে যে নতুন স্বাধীনতার স্বাদ পেয়েছি, তা এখন রক্ষা করা আমাদের সবার দায়িত্ব। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, তারেক রহমানের নেতৃত্বে শহীদ জিয়ার স্বপ্নের স্বনির্ভর বাংলাদেশ পুনরায় বাস্তবে রূপ নেবে।

অনুষ্ঠানে শহীদ জিয়ার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে নজরুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, “আমি নিজ হাতে শহীদ জিয়াকে দেখেছি, তার সঙ্গে সাক্ষাতের সৌভাগ্য আমার হয়েছিল। খুব সাধারণ জীবনযাপন করতেন তিনি, নির্লোভ ছিলেন এবং সর্বদা দেশের কল্যাণ চিন্তাই করতেন। তার দৃঢ় নেতৃত্ব, সিদ্ধান্তের স্পষ্টতা এবং আদর্শ আমার জীবনের পথপ্রদর্শক। আজও তার স্মৃতি বুকে ধারণ করে চলছি।”

তিনি প্রশাসনের উদ্দেশে বলেন, “আমরা ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনার দোসরদের চিনি। আপনারাও চেনেন। দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে এই এলাকার জনগণ দুঃশাসনের শিকার হয়েছে। কিন্তু ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করেনি। এখন সময় এসেছে রুখে দাঁড়ানোর। যারা আওয়ামী লীগের দালালি করে এখন বিএনপির নাম ভাঙিয়ে এলাকায় চাঁদাবাজি, দখলবাজি করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। শান্তিপ্রিয় জনগণের নিরাপত্তা ও স্বস্তি ফিরিয়ে আনুন।”

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন আশিয়ান মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মেজর জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান। উপস্থিত ছিলেন আশিয়ান গ্রুপের পরিচালক জাহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া, উপদেষ্টা সম্পাদক বিপ্লব রহমানসহ বিএনপির স্থানীয় জ্যেষ্ঠ নেতৃবৃন্দ।

দোয়া মাহফিলে শহীদ জিয়াউর রহমানের আত্মার মাগফিরাত এবং বেগম খালেদা জিয়ার দ্রুত সুস্থতা কামনা করা হয়। নজরুল ইসলাম ভূঁইয়ার বক্তব্যে উপস্থিত সকলে করতালি দিয়ে একাত্মতা প্রকাশ করেন। পুরো অনুষ্ঠানটি ছিল এক আবেগঘন, অনুপ্রেরণামূলক এবং প্রত্যয়ের বাতাবরণে আবৃত—a reflection of unwavering loyalty to the ideals of Shahid President Ziaur Rahman.