শিরোনাম:
শিরোনাম:
বিশ্ব নেতৃত্বের মঞ্চে ট্রাম্পের দ্বিতীয় আবির্ভাব ব্যর্থ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রতিবেদন ভারতীয় মিডিয়ার চা-নাস্তা নয়, চাই বিচার-সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ চাই রাশেদ খাঁন নগদে অনিয়ম প্রধান উপদেষ্টার ব্যক্তিগত কর্মকর্তার স্ত্রীর বিতর্কিত নিয়োগ সোমবার শুরু হচ্ছে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে দ্বিতীয় দফার সংলাপ সিলেট রেঞ্জে চালু হলো অনলাইন জিডি ঘরে বসেই করা যাবে সাধারণ ডায়েরি নিবন্ধন ফিরে পেতে জামায়াতের আপিলের রায় আজ তারেক রহমানের হাত ধরেই শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্বপ্নপূরণ হবে সার্ক ফুটবলারদের ‘দেশি’ স্বীকৃতি: ঘরোয়া ফুটবলে বিতর্ক ও শঙ্কা নির্বাচনের পরেও ডক্টর ইউনুস কে কাজে লাগানো যাবে জাতীয় স্বার্থে

১০০ ব্যবসায়ী নিয়ে ঢাকায় এলেন চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও

মো : সবুজ মিয়া
সময় : শনিবার, মে ৩১, ২০২৫

চীনের বাণিজ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে বড় ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল ঢাকা সফরে: দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদারের প্রত্যাশা

বাংলাদেশ-চীন অর্থনৈতিক সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচনের লক্ষ্যে চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও এক বিশাল ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারী প্রতিনিধি দল নিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন। শনিবার, ৩১ মে দুপুরে তিনি ঢাকায় এসে পৌঁছান। সরকারের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এই সফরের খবর নিশ্চিত করেছেন।

এই সফরে ওয়াং ওয়েনতাও-এর সঙ্গে রয়েছেন প্রায় ১০০ জন ব্যবসায়ী এবং বিনিয়োগকারী। পুরো প্রতিনিধিদলের সদস্য সংখ্যা প্রায় ২০০ জন। এমন একটি বৃহৎ প্রতিনিধি দলের আগমন এটাই ইঙ্গিত দেয় যে, চীন বাংলাদেশকে অর্থনৈতিক অংশীদার হিসেবে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছে।

গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক ও কর্মসূচি

ঢাকায় পৌঁছানোর পর শনিবার বিকেলেই চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী বাংলাদেশের বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে মিলিত হবেন। দুই দেশের বাণিজ্যিক কৌশল ও সহযোগিতা বৃদ্ধির সম্ভাবনা নিয়ে তারা আলোচনা করবেন বলে জানা গেছে।

পরদিন, অর্থাৎ রোববার, ১ জুন, চীনা বাণিজ্যমন্ত্রী পাঁচটি সেশন বা বৈঠকে অংশ নেবেন, যেগুলো মূলত বাংলাদেশি ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারী এবং বিভিন্ন বাণিজ্যিক সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে “ম্যাচমেকিং” বা পারস্পরিক বিনিয়োগ আলোচনা ভিত্তিক হবে। এই সেশনগুলোতে অংশগ্রহণের মাধ্যমে দুই দেশের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন এবং সম্ভাব্য অংশীদারিত্বের ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করার সুযোগ তৈরি হবে।

রোববারের সেশনগুলোর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ এবং সামাজিক উদ্যোক্তা ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে। তার উপস্থিতি এ অনুষ্ঠানকে একটি আন্তর্জাতিক মাত্রা দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।

যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের বৈঠক

২ জুন অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ-চীন যৌথ অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য কমিশনের (Joint Economic and Trade Commission) একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক। বাংলাদেশের পক্ষে এই বৈঠকে নেতৃত্ব দেবেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং চীনের পক্ষ থেকে নেতৃত্ব দেবেন বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও। এই বৈঠক দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক সহযোগিতা এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও মজবুত করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হচ্ছে।

এই বৈঠকে উভয় দেশের পক্ষ থেকে বাণিজ্যিক প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণ, শুল্ক কাঠামো সহজীকরণ, বিনিয়োগ বান্ধব নীতি প্রণয়ন এবং ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নয়নের বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে। আশা করা হচ্ছে, এ বৈঠক থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত ও চুক্তি বাস্তবায়নের পথ তৈরি হবে।

শিল্পখাতে চীনা আগ্রহ

চীনের প্রতিনিধিদল শুধু আলোচনাতেই সীমাবদ্ধ থাকছে না, বরং বাংলাদেশের শিল্প ও উৎপাদন খাতের বাস্তব চিত্র সরেজমিনে দেখার জন্য সরাসরি উদ্যোগ নিয়েছে। সফরের অংশ হিসেবে চীনা প্রতিনিধিদের একটি অংশ গাজীপুরে অবস্থিত একটি আধুনিক তৈরি পোশাক কারখানা পরিদর্শন করবেন। এই পরিদর্শনের মাধ্যমে চীনা বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পে বিনিয়োগের সম্ভাবনা সরাসরি মূল্যায়ন করতে পারবেন।

এছাড়া গার্মেন্টস শিল্প সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের সঙ্গে চীনের প্রতিনিধিদের মধ্যে পৃথক ম্যাচমেকিং সভাও অনুষ্ঠিত হবে। এতে উভয় দেশের উদ্যোক্তারা তাদের প্রয়োজন ও সুযোগ নিয়ে আলোচনা করতে পারবেন এবং যৌথ বিনিয়োগ কিংবা প্রযুক্তি হস্তান্তরের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে পারবেন।

বিনিয়োগের নতুন সম্ভাবনা

সরকারি সূত্রমতে, এই সফরের মূল উদ্দেশ্য হলো দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক সম্পর্ককে আরও বিস্তৃত করা এবং নতুন বিনিয়োগের দ্বার উন্মোচন করা। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (BIDA)-এর তথ্য অনুযায়ী, সফরের সময় দুই দেশের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষরের সম্ভাবনা রয়েছে। এতে ‘যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ’ গঠনের প্রস্তাব রাখা হয়েছে, যার মূল কাজ হবে দ্বিপাক্ষিক আমদানি-রপ্তানির জটিলতা দূর করা এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রক্রিয়া সহজতর করা।

জানা গেছে, চীন ইতোমধ্যেই এ বিষয়ে একটি খসড়া সমঝোতা প্রস্তাব চলতি বছরের মার্চ মাসে বাংলাদেশ সরকারের কাছে পাঠিয়েছে। এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে দুই দেশের বাণিজ্যিক নীতি আরও সমন্বিত হবে এবং দীর্ঘমেয়াদে দুদেশের অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব আরও দৃঢ় হবে।

অতীত সম্পর্কের ধারাবাহিকতা ও ভবিষ্যতের রূপরেখা

চীন দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান ব্যবসায়িক অংশীদার। চীন থেকে বাংলাদেশে পণ্যের আমদানি যেমন অনেক বেশি, তেমনি বাংলাদেশও রপ্তানি বাড়াতে চায় চীনের বিশাল বাজারে। এ জন্য প্রয়োজন একটি ভারসাম্যপূর্ণ বাণিজ্য কাঠামো, যা দুদেশের স্বার্থ রক্ষা করে এবং টেকসই অর্থনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলে।

চীনের এই সফর সেই প্রচেষ্টারই একটি বড় ধাপ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এমন একটি সময় সফরটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে যখন বাংলাদেশ বিনিয়োগ ও রপ্তানি বাড়াতে নানামুখী কৌশল নিচ্ছে এবং বৈদেশিক বিনিয়োগকে আরও আকর্ষণীয় করতে বিভিন্ন আইন ও নীতিমালা সংশোধনের প্রক্রিয়ায় রয়েছে।

অন্যদিকে, চীনের দৃষ্টিতেও বাংলাদেশ একটি কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ দেশ। দক্ষিণ এশিয়ায় বাণিজ্য সম্প্রসারণ, উৎপাদন ঘাঁটি তৈরি এবং রপ্তানি বন্দর ব্যবহারে বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান চীনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

Tags

অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগ আদালতের রায় গণতন্ত্র গ্রেপ্তার ১২ চট্টগ্রাম চীন ছাত্র আন্দোলন জাতীয় ঐক্য জাতীয় নিরাপত্তা ড. ইউনূস ড. মুহাম্মদ ইউনূস তারেক রহমান ত্রিশাল দুর্নীতি নাহিদ ইসলাম নির্বাচন নির্বাচন কমিশন পাকিস্তান প্রধান উপদেষ্টা প্রশাসনিক সংস্কার ফিলিস্তিন বাংলাদেশ বাংলাদেশ নির্বাচন বাংলাদেশ ফুটবল বাংলাদেশ রাজনীতি বিএনপি বিডা বিনিয়োগ ভারত ময়মনসিংহ মানবাধিকার মুহাম্মদ ইউনূস রাজনীতি রাজনৈতিক দল রাজনৈতিক সংলাপ রাজনৈতিক সহিংসতা শিল্পায়ন শেখ হাসিনা সংবিধান সচিবালয় সিলেটে কারফিউর মধ্যেও থেমে নেই চিনি চোরাচালান সুশাসন সেনাবাহিনী ২ লাখ কোটি টাকা ছাড়াল খেলাপি ঋণের পরিমাণ

পুরাতন খবর

এক ক্লিকে বিভাগের খবর