শিরোনাম:
শিরোনাম:
Xiaomi Redmi K80 Ultra – একটি প্রযুক্তির বিস্ময় | সম্পূর্ণ স্পেসিফিকেশন, রিভিউ ও মূল্য 🔍 Vivo X200 FE – গ্লোবাল মার্কেটে নতুন চমক, আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মোচন ২৩ জুন! Vivo iQOO Z10 Lite – বাজেট ফাইভজি স্মার্টফোনে দুর্দান্ত ব্যাটারি ও পারফরম্যান্স Samsung Galaxy Z Flip7 – প্রিমিয়াম ফোল্ডেবল স্মার্টফোনের নতুন সংজ্ঞা Xiaomi Poco F7: ফ্ল্যাগশিপ পারফরম্যান্সে নতুন রাজা আসছে বাজেটের ভেতরেই! OnePlus Nord CE5: আসছে দুর্দান্ত ব্যাটারি ও শক্তিশালী পারফরম্যান্সসহ নতুন স্মার্টফোন! কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও সামাজিক পরিবর্তন: প্রযুক্তির উত্থানে বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য, নীতি ও নেতৃত্বের রূপান্তর GTA Online: ‘Money Fronts’ আপডেট নিয়ে ফিরছে অপরাধ জগতের নতুন অধ্যায় ২০২৫ সালের এইচএসসি: পরীক্ষার্থীদের জন্য বিপদ না বাঁচার সুযোগ ইন্টার মায়ামি ফুটবল ক্লাব – ২০২৫ সালের দল, ইতিহাস ও সাফল্য বিশ্লেষণ

নিবন্ধন ফিরে পেতে জামায়াতের আপিলের রায় আজ

মো : সবুজ মিয়া
সময় : রবিবার, জুন ১, ২০২৫

বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিলের বিষয়টি আবারও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে। দলটির নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছিল, তার বিরুদ্ধে করা আপিলের রায় ঘোষণা হবে আজ, রোববার। এই রায়ের মধ্য দিয়ে নির্ধারিত হবে দলটি আবারও রাজনৈতিক দল হিসেবে স্বীকৃতি পাবে কি না।

আজকের আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় মামলাটি এক নম্বরে রয়েছে। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ গত ১৪ মে এই রায়ের দিন ধার্য করেন। মামলার শুনানিতে জামায়াতের পক্ষ থেকে অংশ নিয়েছেন বিশিষ্ট আইনজীবী এহসান এ সিদ্দিক, ইমরান এ সিদ্দিক এবং মোহাম্মদ শিশির মনির। অন্যদিকে, নির্বাচন কমিশনের (ইসি) পক্ষে যুক্তিতর্ক তুলে ধরেন আইনজীবী তৌহিদুল ইসলাম।

শুনানির পর আদালতের বাইরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আইনজীবী শিশির মনির। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ও সংসদীয় রাজনৈতিক ধারায় জামায়াতে ইসলামী সবসময়ই একটি সক্রিয় অংশ ছিল। স্বাধীনতার পর দেশে অনুষ্ঠিত প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনে তারা অংশ নিয়েছে এবং সংসদেও প্রতিনিধিত্ব করেছে। শুধু তা-ই নয়, অতীতে সরকারের অংশ হিসেবেও কাজ করেছে জামায়াত। এ দলটির এমন অতীত থাকা সত্ত্বেও, ২০০৮ সালে নির্বাচন কমিশন যখন তাদের নিবন্ধন দেয়, তখনই এক শ্রেণির পক্ষ থেকে আপত্তি ওঠে এবং শেষ পর্যন্ত হাইকোর্ট তা বাতিল করে।”

তিনি আরও বলেন, “এই রায়ের বিরুদ্ধে আমরা আপিল করি এবং দীর্ঘ শুনানির পর অবশেষে মামলাটি রায়ের পর্যায়ে এসেছে। আমরা আদালতে যুক্তি দিয়েছি, এভাবে নিবন্ধন বাতিল করা শুধু রাজনৈতিক প্রক্রিয়া নয়, বরং এটি বিচার ব্যবস্থার রাজনৈতিকীকরণের একটি দৃষ্টান্ত। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল এবং জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল—এই দুটি বিষয়ই ছিল এক প্রক্রিয়ার অংশ, যার মাধ্যমে বিচার বিভাগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়েছে।”

আইনজীবী শিশির মনির দাবি করেন, “আমরা আদালতকে বোঝাতে চেষ্টা করেছি যে, এই রায় কেবল একটি রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল নয়, এটি একটি বৃহত্তর রাজনৈতিক প্রভাব ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সিদ্ধান্ত। আমরা বিশ্বাস করি, আদালত আমাদের যুক্তিগুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করেছেন। আশা করছি, রায়ে ন্যায্যতা প্রতিফলিত হবে এবং জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন পুনর্বহাল করা হবে।”

শুনানিতে জামায়াতের নির্বাচনী প্রতীক সংক্রান্ত বিষয়টিও তুলে ধরা হয়। আইনজীবীদের ভাষ্যমতে, রাজনৈতিক দলের প্রতীক বাতিল করার সিদ্ধান্ত একটি দলকে রাজনৈতিক প্রক্রিয়া থেকে সম্পূর্ণভাবে বাদ দেওয়ার সমতুল্য, যা গণতন্ত্রের জন্য সুস্থ নয়। তারা আদালতে প্রশ্ন তোলেন, “যে দল বিভিন্ন নির্বাচনে অংশ নিয়েছে এবং জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেছে, সেই দলকে নিবন্ধন থেকে বঞ্চিত করা কি আদৌ সংবিধানসম্মত?”

জামায়াতে ইসলামীর ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায়, দলটি বাংলাদেশে রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় রয়েছে স্বাধীনতার পর থেকেই। ১৯৮৬, ১৯৯১, ২০০১ সহ বিভিন্ন জাতীয় নির্বাচনে তারা সংসদ সদস্য পেয়েছে। ২০০১ সালে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের শরিক হিসেবে মন্ত্রিসভাতেও অংশ নিয়েছিল জামায়াত। এ ছাড়া স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশগ্রহণ এবং রাজপথে সক্রিয় ভূমিকা রাখার মধ্য দিয়ে দলটি রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে নিজস্ব জায়গা করে নিয়েছিল।

২০০৮ সালে নির্বাচন কমিশন দলটিকে নিবন্ধন দেয়। কিন্তু ওই বছরের পর থেকেই জামায়াতের বিরুদ্ধে একের পর এক আইনি বাধা সৃষ্টি হতে থাকে। হাইকোর্টের এক রায়ে বলা হয়, জামায়াতে ইসলামী সংবিধানের কিছু মৌলিক বিধানের বিরোধী দল, তাই তাদের নিবন্ধন বৈধ নয়। এই রায়ের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন দলটির নিবন্ধন বাতিল করে।

তবে জামায়াতপন্থী আইনজীবীরা দাবি করেন, হাইকোর্টের রায়ে রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব ছিল এবং রায়টি সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে দেওয়া হলেও এর আইনি ভিত্তি প্রশ্নবিদ্ধ। তারা বলেন, বিচার বিভাগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে, যা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে কাম্য নয়।

এ বিষয়ে আরও বলেন, “গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় রাজনৈতিক দলের বৈধতা নিয়ে সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক প্রক্রিয়াতেই হওয়া উচিত, আদালতের মাধ্যমে নয়। আদালত যখন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল করে, তখন তা রাজনৈতিক পরিণতি বয়ে আনে। আদালতের উচিত নিরপেক্ষ থেকে সংবিধান অনুযায়ী ব্যাখ্যা দেওয়া। কিন্তু এখানে আমরা বিচার বিভাগের রাজনৈতিকীকরণ দেখতে পাচ্ছি।”

এখন অপেক্ষা কেবল রায়ের। আজকের এই রায়ে নির্ধারিত হবে, জামায়াতে ইসলামী রাজনৈতিক দল হিসেবে তার সাংবিধানিক অবস্থান ফেরত পাবে কিনা। এটি শুধু জামায়াত নয়, দেশের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলের জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত হবে। কারণ একটি দলকে নির্বাচন থেকে বাদ দেওয়া, প্রতীক কেড়ে নেওয়া এবং নিবন্ধন বাতিল করা একটি বৃহত্তর প্রশ্ন তোলে: দেশের গণতন্ত্র কতটা অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সহনশীল?

আজকের রায়ের মাধ্যমে হয়তো এ প্রশ্নগুলোরও কিছু উত্তর মিলবে। আপাতত রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সাধারণ নাগরিকেরা অপেক্ষায় আছেন, এই রায়ে কী বার্তা দেয় সর্বোচ্চ আদালত। রায় যাই হোক, এটি বাংলাদেশে রাজনীতি, বিচারব্যবস্থা এবং গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ চিত্র নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

Tags

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগ আন্তর্জাতিক সম্পর্ক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গণতন্ত্র গ্রেপ্তার ১২ চট্টগ্রাম ছাত্র আন্দোলন জাতীয় নির্বাচন জাতীয় ঐক্য ড. ইউনূস ড. মুহাম্মদ ইউনূস তারেক রহমান ত্রিশাল দুর্নীতি নাহিদ ইসলাম নির্বাচন নির্বাচন কমিশন পাকিস্তান প্রধান উপদেষ্টা প্রশাসনিক সংস্কার ফিলিস্তিন বাংলাদেশ বাংলাদেশ অর্থনীতি বাংলাদেশ নির্বাচন বাংলাদেশ ফুটবল বাংলাদেশ রাজনীতি বিএনপি ভারত ময়মনসিংহ মানবাধিকার মুহাম্মদ ইউনূস রাজনীতি রাজনৈতিক ঐক্য রাজনৈতিক দল রাজনৈতিক সংলাপ শেখ হাসিনা সংবিধান সচিবালয় সিঙ্গাপুর বনাম বাংলাদেশ সিলেটে কারফিউর মধ্যেও থেমে নেই চিনি চোরাচালান সুশাসন সেনাবাহিনী ২ লাখ কোটি টাকা ছাড়াল খেলাপি ঋণের পরিমাণ

পুরাতন খবর

এক ক্লিকে বিভাগের খবর
error: Content is protected !!
error: Content is protected !!