শিরোনাম:
শিরোনাম:
তারেক রহমানের হাত ধরেই শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্বপ্নপূরণ হবে সার্ক ফুটবলারদের ‘দেশি’ স্বীকৃতি: ঘরোয়া ফুটবলে বিতর্ক ও শঙ্কা নির্বাচনের পরেও ডক্টর ইউনুস কে কাজে লাগানো যাবে জাতীয় স্বার্থে দ্বিতীয় ধাপে সংলাপে বসছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ১০০ ব্যবসায়ী নিয়ে ঢাকায় এলেন চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের তালিকাভুক্তির শেষ সময় ২ জুন জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন মামলার রায় রোববার জাপান সফর শেষে ঢাকার পথে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রবাসীদের রেমিটেন্সেই বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে: প্রধান উপদেষ্টা বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে তলিয়েছে নোয়াখালী, সীমাহীন দুর্ভোগ

দরবেশ বাবা ক্ষেত রাগববোয়াল, শেয়ারবাজার সালমান-শিবলী কেলেষ্কারি

মোঃ মাহবুবুল আলম
সময় : বৃহস্পতিবার, আগস্ট ১৫, ২০২৪

শেয়ারবাজারে কারসাজি এবং অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের নাম উঠে এসেছে। এ বিষয়ে আরও তদন্তের পর দেখা যায়, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সদ্য পদত্যাগ করা চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম, সাবেক কমিশনার শেখ শামসুদ্দীন আহমেদ এবং বর্তমান নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমানের নামও উল্লেখ রয়েছে। মে মাসে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ে এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন জমা দেয়। তবে এই প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পরেও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বরং তারা অদৃশ্য শক্তির প্রভাবে আরও প্রভাবশালী হয়ে ওঠেন।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম আইন লঙ্ঘন করে সালমান এফ রহমানকে বন্ডের অনুমোদন দিয়েছিলেন। এর ফলস্বরূপ তিনি দ্বিতীয়বার বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসাবে পুনঃনিয়োগ পান।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বিএসইসির পরিচালক শেখ মাহবুব-উর-রহমান, সরকারি সমবায় অধিদপ্তরের ডেপুটি রেজিস্ট্রার আবুল খায়ের হিরু, তার প্রতিষ্ঠান ডিআইটি কো-অপারেটিভ, হিরুর বাবা আবুল কালাম মাদবর, আলোচিত কারসাজিকারক আব্দুল কাইয়ুম, হিরুর প্রতিষ্ঠান মোনার্ক হোল্ডিংস, ক্রিকেটার ও সাবেক সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসান, যুক্তরাষ্ট্রে আর্থিক কেলেঙ্কারিতে জড়িত নিষিদ্ধ ব্যবসায়ী জাবেদ এ মতিন এবং বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক প্রেসিডেন্ট সায়েদুর রহমানের নামও উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনের তথ্যগুলো বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্টের সত্যতা যাচাই করে প্রস্তুত করা হয়েছে। এতে সেরা ১০টি গণমাধ্যমের রিপোর্টের রেফারেন্স উল্লেখ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ের সাবেক এক শীর্ষ কর্মকর্তা এ প্রতিবেদনের বিষয়ে সহায়তা করেছেন। তবে এ ব্যাপারে সিআইডির কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে সালমান এফ রহমান কারাগারে এবং শিবলী রুবাইয়াত পলাতক থাকায় তাদের মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চাপে পড়ে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা বিদেশে পালিয়ে যান। এরপর তার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান দেশেই আত্মগোপনে চলে যান। তবে গত মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জ থেকে কোস্টগার্ডের হাতে গ্রেফতার হন। নিউমার্কেট থানায় পুলিশের করা মামলায় বুধবার তাকে ১০ দিনের রিমান্ড দেওয়া হয়। এই গ্রেফতারের পরই তার নাম ব্যাপক আলোচনায় আসে।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয় যে, সালমান এফ রহমান বেক্সিমকো গ্রীন সুকুক বন্ড ছাড়িয়ে ৩ হাজার কোটি টাকা তুলে নেন। তিনি প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে ১০০ টাকা দরে ওই বন্ড কিনতে বাধ্য করেন। এছাড়া বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ারের দাম ১০ টাকা থেকে ১৮০ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ওপর চাপিয়ে দিয়ে শত কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন। এই প্রক্রিয়ায় তাকে সহায়তা করেন বিএসইসি চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।

এছাড়া ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সম্মতি না দিলেও বিএসইসির চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম এবং তার সহযোগীরা অবৈধভাবে শেয়ার মার্কেটে দুর্বল কোম্পানি যেমন সাউথ বাংলা অ্যাগ্রিকালচারাল অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক, এস আলমের মালিকানাধীন গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, এনআরবি ব্যাংক, শিকদার ইস্যুরেন্স, ক্যাপিটেপ গ্রামীণ ব্যাংক গ্রোথ ফান্ড, এশিয়াটিক ল্যাব, বেস্ট হোল্ডিংস ইত্যাদির আইপিও অনুমোদন দেন। এই প্রক্রিয়ায় তারা বাজার থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা তুলে নিয়ে ধনীদের আরও ধনী করেন এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ক্ষতিগ্রস্ত করেন।

শেয়ারবাজারে দুর্বল আইপিও অনুমোদনের ফলে বিপুল অঙ্কের টাকা বাজার থেকে চলে যায়। এরপর সেকেন্ডারি মার্কেটে কারসাজি চক্রের তাণ্ডবে ধারাবাহিকভাবে বাজারের পতন ঘটে, যা সাধারণ বিনিয়োগকারীদের নিঃস্ব করে দেয়। এছাড়া বেক্সিমকো লিমিটেডকে ২ হাজার ৬০০ কোটি টাকার জিরো কুপন বন্ড অনুমোদন দিয়েছিলেন শিবলী রুবাইয়াত। এর বিনিময়ে তিনি আর্থিকভাবে লাভবান হন এবং শিবলী রুবাইয়াতের পুনঃনিয়োগে সালমান এফ রহমান সরাসরি সহায়তা করেন।

শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম, শেখ শামসুদ্দীন আহমেদ, সাইফুর রহমান এবং আবুল খায়ের হিরু মিলে বন্ধ থাকা কিছু কোম্পানি চালুর উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তারা পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে নিজস্ব লোকদের নতুন পর্ষদে নিয়োগ দেন এবং কোম্পানিগুলোকে দখল করে নেন। এর মধ্যে এমারেল্ড অয়েলের পর্ষদ ভেঙে মিনোরি বাংলাদেশকে মালিকানা দিয়ে শেয়ার কারসাজি করে শতকোটি টাকা আত্মসাৎ করেন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বিএসইসির চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত ২০২২ সালে ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, ডিএসইর সূচক ১০ হাজার পয়েন্টে উন্নীত হবে এবং প্রতিদিন লেনদেন ৫ হাজার কোটি টাকা ছাড়াবে। সাধারণ বিনিয়োগকারীরা তার এই বক্তব্য বিশ্বাস করে বিনিয়োগ করেন, কিন্তু ধারাবাহিকভাবে পতনের মধ্যে বিএসইসি ফ্লোর প্রাইস তুলে নেয়। এ সময়ে সূচক ৫২০০ পয়েন্টে নেমে আসে এবং লেনদেন নেমে আসে মাত্র ৩০০ কোটি টাকায়।

শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম এবং তার সহযোগীরা কারসাজি চক্রের সঙ্গে মিলে বাজারের গোপন তথ্য পাচার করে বিপুল অঙ্কের টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এতে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা নিঃস্ব হয়ে গেছেন, আর চক্রটি লাভবান হয়েছে।

এই দুর্নীতির ঘটনা প্রমাণ করে যে, শেয়ারবাজারে সুপরিকল্পিত কারসাজি এবং রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বিশাল অঙ্কের টাকা আত্মসাত করা হয়েছে। যা দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে উঠতে পারে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

Tags

Icc T20 অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগ আপিল বিভাগে স্থগিত খালেদা জিয়া গণতন্ত্র গ্রেপ্তার ১২ চট্টগ্রাম ছাত্র আন্দোলন জাতীয় ঐক্য ড. ইউনূস ড. মুহাম্মদ ইউনূস তারেক রহমান ত্রিশাল নাহিদ ইসলাম নির্বাচন নির্বাচন কমিশন পাকিস্তান প্রধান উপদেষ্টা প্রশাসনিক সংস্কার ফিলিস্তিন বঙ্গোপসাগর বাংলাদেশ বাংলাদেশ অর্থনীতি বাংলাদেশ ফুটবল বাংলাদেশ রাজনীতি বাফুফে বিএনপি বিডা বিনিয়োগ ভারত ময়মনসিংহ মানবাধিকার মুহাম্মদ ইউনূস রাজনীতি রাজনৈতিক দল রাজনৈতিক সংলাপ শিল্পায়ন শেখ হাসিনা সচিবালয় সিলেটে কারফিউর মধ্যেও থেমে নেই চিনি চোরাচালান সুশাসন সেনাবাহিনী ২ লাখ কোটি টাকা ছাড়াল খেলাপি ঋণের পরিমাণ

পুরাতন খবর

এক ক্লিকে বিভাগের খবর