নির্বাচন কমিশন (ইসি) আওয়ামী লীগের শাসনামলে নিবন্ধিত ৯৬টি নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন বাতিলের সিদ্ধান্ত চূড়ান্তভাবে অনুমোদন করেছে। পাশাপাশি নতুন নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন দেওয়ার উদ্যোগও নেওয়া হচ্ছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন ভবনের সম্মেলন কক্ষে এক সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় নির্বাচন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়, যার মধ্যে সীমানা পুনর্নির্ধারণ, রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন, জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের প্রস্তুতি, ভোটকেন্দ্র স্থাপন, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্যানেল তৈরি ও তদারকির বিষয় অন্তর্ভুক্ত ছিল। সভায় নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার সভাপতিত্ব করেন।
তিনি জানান, ভোটার সংখ্যা, ভৌগোলিক অবস্থান ও প্রশাসনিক সুবিধার ভিত্তিতে সীমানা পুনর্নির্ধারণ করা হবে। এ সংক্রান্ত বিষয়ে ৬৪ জেলা থেকে প্রায় ৪০০ আবেদন জমা পড়েছে, যেখানে অনেকে ২০০৮ সালের আগের সীমানায় ফিরে যেতে আগ্রহী।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। নিবন্ধন সংক্রান্ত গণবিজ্ঞপ্তির বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে রিট হয়েছে এবং আদালতের রায়ের কপি পাওয়ার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। নিবন্ধিত সংস্থাগুলো যদি শর্ত পূরণ করতে পারে, তাহলে তাদের নিবন্ধন বহাল রাখা হবে, অন্যথায় তা বাতিল করা হবে।
নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোর নিবন্ধন বাতিলের বিষয়ে কমিশন একটি খসড়া নীতিমালা তৈরি করেছে। কমিশনের বিবেচনায় কিছু সংস্থা বাতিল হবেই। প্রয়োজনে বিদ্যমান নীতিমালা সংস্কারের মাধ্যমে নতুন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ভোটকেন্দ্র নীতিমালা নিয়েও আলোচনা হয়েছে এবং একটি খসড়া প্রণয়নের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তবে সীমানা নির্ধারণের বিষয়ে আপডেট এখনো পাওয়া যায়নি বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি আরও বলেন, অতীতের বিতর্ক এড়াতে নির্বাচন কমিশন সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছে। নির্বাচন সংশ্লিষ্ট অনেক ব্যক্তি অতীতে বিতর্কিত ছিলেন, যার কারণে সরকার ও কমিশন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। ভবিষ্যতে যেন নির্বাচন প্রক্রিয়ায় কোনো অনিয়ম বা অস্বচ্ছতা না থাকে, সে লক্ষ্যে কমিশন প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচন নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশন সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। কমিশনের লক্ষ্য একটি নজিরবিহীন স্বচ্ছ নির্বাচন আয়োজন করা, যেখানে কোনো বিতর্কের সৃষ্টি হবে না এবং জনগণের আস্থা অটুট থাকবে।