শিরোনাম:
শিরোনাম:
পলক, সুমন, শিরিন শারমীনসহ ২৪ রাজনীতিবিদ সেনানিবাসে আশ্রয় নিয়েছিলেন ছুটি ছাড়া অনুপস্থিত ও সমাবেশে গেলে শাস্তি বাংলাদেশের সব শর্ত মেনে নিচ্ছে পাকিস্তান ঈশ্বরদীর বালুমহাল নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ৭, উত্তেজনা থেমেছে পুলিশের হস্তক্ষেপে বাণিজ্য সংগঠন বিধিমালা-২০২৫ এর গেজেট প্রকাশ একদিনে ইউক্রেনের ২৩২ ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি রাশিয়ার শারজায় নতুন শুরুতে বাংলাদেশ, লিটনের অধিনায়কত্ব মিশনে চোখ জয়ে জাতীয় দলে ফাহামিদুল ইসলামের প্রত্যাবর্তন জামায়াত মজলুম হতে পারে, কিন্তু জালেম নয়: ডা. শফিকুর রহমান এমআরএর নতুন ভবনের উদ্বোধন করলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস

ছুটি ছাড়া অনুপস্থিত ও সমাবেশে গেলে শাস্তি

সবুজ মিয়া
সময় : শুক্রবার, মে ২৩, ২০২৫

সরকারিচাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫: অনুপস্থিতি ও সমাবেশে যোগদান করলে শাস্তির বিধান

বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রশাসনিক শৃঙ্খলা ও কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকারি চাকরিতে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধাচরণ, কর্তব্যে অবহেলা এবং অনুপস্থিতির মতো আচরণ কঠোরভাবে দমন করার উদ্দেশ্যে ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়া অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এই খসড়া অনুমোদনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

সংশোধিত বিধানে কী থাকছে?

এই অধ্যাদেশের আওতায় এখন থেকে কোনো কর্মকর্তা ছুটি ছাড়াই কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলে কিংবা কোনো সভা-সমাবেশে যোগদান করলে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে। সরকার চাইলে এমন কর্মচারীদের চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত, স্থায়ীভাবে অপসারণ কিংবা বেতন গ্রেড কমিয়ে দেওয়া—এই ধরনের পদক্ষেপ নিতে পারবে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রণীত খসড়ায় মোট চারটি অপরাধকে চিহ্নিত করা হয়েছে যেগুলো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অসদাচরণ হিসেবে বিবেচিত হবে। এগুলো হলো:

  1. কোনো কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হওয়া, যার ফলে সহকর্মীদের মধ্যে অনুগত্যহীনতা সৃষ্টি হয়, শৃঙ্খলা ভঙ্গ হয় বা দায়িত্ব পালনে বিঘ্ন ঘটে।
  2. যৌক্তিক কারণ ছাড়া বা ছুটি ছাড়া এককভাবে বা অন্যদের সঙ্গে কর্মক্ষেত্র থেকে অনুপস্থিত থাকা।
  3. অন্য কর্মচারীদের দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়া বা তাদের কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকতে প্ররোচিত করা।
  4. কারো কর্তব্য পালনে বাধা সৃষ্টি করা বা উসকানি প্রদান।

এইসব অপরাধের জন্য প্রস্তাবিত শাস্তি হিসেবে চাকরি থেকে বরখাস্ত, পদাবনতি, কিংবা নিম্ন বেতন গ্রেডে অবনমন অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

আইন প্রণয়নের পেছনের প্রেক্ষাপট

বর্তমান অধ্যাদেশটি মূলত ২০১৮ সালের সরকারি চাকরি আইনের একটি পরিমার্জিত সংস্করণ। জানা গেছে, সাড়ে চার দশক আগে প্রণীত বিধানগুলোর আলোকে নতুন সংশোধন আনয়ন করা হয়েছে, যাতে প্রশাসনে কার্যকারিতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি পায়।

অধিকন্তু, বর্তমান সরকারের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো সংস্কার কমিশনগুলোর সুপারিশ বাস্তবায়ন করা। তাই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কাছ থেকে সুপারিশ বাস্তবায়নের সক্ষমতা ও সময়সীমা সংক্রান্ত মতামত সংগ্রহ করে উপদেষ্টা পরিষদের সামনে উপস্থাপন করার জন্য।

শহিদ পরিবার ও আহতদের জন্য পুনর্বাসন পরিকল্পনা

এই বৈঠকে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানে নিহত ও আহতদের পরিবারের পুনর্বাসন ও কল্যাণের জন্য একটি নতুন অধ্যাদেশ অনুমোদন করা হয়েছে। ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহিদ পরিবার এবং আহত ছাত্র-জনতার কল্যাণ ও পুনর্বাসন অধ্যাদেশ, ২০২৫’ নামে খসড়াটি চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে।

এর মাধ্যমে সরকার ১৯৭০-এর দশকের রাজনৈতিক আন্দোলনে নিহত এবং আহতদের স্বীকৃতি ও পুনর্বাসনের বিষয়ে একটি দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ নিয়েছে। এই অধ্যাদেশের আওতায় তাঁদের জন্য বিশেষ ভাতা, স্বাস্থ্যসেবা এবং শিক্ষা সুবিধাসহ বিভিন্ন পুনর্বাসন কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত

বৈঠকে আরও কিছু প্রস্তাব অনুমোদন পেয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে—

  • মৎস্য সুরক্ষা ও সংরক্ষণ বিষয়ে একটি অধ্যাদেশের চূড়ান্ত অনুমোদন: যার মাধ্যমে দেশের জলজ সম্পদ সংরক্ষণে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
  • ‘দ্য প্রোটেকশন অ্যান্ড কনজারভেশন অব ফিশ (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়ার অনুমোদন: এতে মাছের প্রজনন মৌসুমে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য মাছ ধরা বন্ধ রাখার বিধানসহ নানা পরিবেশবান্ধব পদক্ষেপ যুক্ত করা হয়েছে।
  • বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসের মধ্যে নৌ-প্রতিরক্ষাসামগ্রী বিষয়ক সহযোগিতা চুক্তির অনুমোদন: যা ভবিষ্যতে সামরিক ও নিরাপত্তা ক্ষেত্রে দু’দেশের পারস্পরিক সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করবে।

সমালোচনা ও উদ্বেগ

তবে সংশোধিত সরকারি চাকরি আইন নিয়ে ইতোমধ্যে কিছু মহলে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। কর্মচারী সংগঠনগুলোর একাংশের মতে, এই আইন প্রয়োগে যদি স্বচ্ছতা এবং যথাযথ তদন্ত প্রক্রিয়া নিশ্চিত না করা হয়, তবে তা নিরীহ কর্মচারীদের হয়রানির হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করেন, সরকারের উদ্দেশ্য ইতিবাচক হলেও, এর প্রয়োগ যেন হয় ন্যায্যতা ও মানবিকতার আলোকে। কর্মস্থলে শৃঙ্খলা বজায় রাখা যেমন জরুরি, তেমনি কর্মকর্তাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতাও সংবিধানস্বীকৃত অধিকার। এই দুয়ের ভারসাম্য রক্ষা করাই হবে আইনের সফল প্রয়োগের মূল চাবিকাঠি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

Tags

ChatGPT HSC Icc T20 আওয়ামী লীগ আন্দোলন করে রায় পরিবর্তন হয় না আপিল বিভাগে স্থগিত আহত ১২ আহত ১৫ এইচএসসি এইচএসসি ও সমমান ওবায়দুল কাদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কোটা কোটা আন্দোলন গ্রেপ্তার ১২ চিকিৎসককে মারধর: বিইউবিটির ৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা চৌরাস্তা বাজার জেলা প্রশাসক ড. ইউনূস ত্রিশাল নতুন রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’র আত্মপ্রকাশ নন-ক্যাডার নবজাগ্রত যুব সংঘ নাহিদ ইসলাম পাকিস্তান প্রধান অতিথি তারেক রহমান প্রধান বিচারপতি প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেল প্রাথমিক বিদ্যালয় ফিলিস্তিন ফিলিস্তিন জিন্দাবাদ বাংলাদেশ বাংলা ব্লকেড বিজিবি বিজিবি মোতায়েন ভারত ময়মনসিংহ মুসলিম উম্মাহ রাজনীতি শেখ হাসিনা সিলেটে কারফিউর মধ্যেও থেমে নেই চিনি চোরাচালান স্থানীয় সংবাদ স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২৫: ২ লাখ কোটি টাকা ছাড়াল খেলাপি ঋণের পরিমাণ

পুরাতন খবর

এক ক্লিকে বিভাগের খবর