শিরোনাম:
শিরোনাম:
এবি পার্টি জাতীয় ঐক্যের আহ্বানে ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক উর্দু ভাষাভাষী নিয়ে কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের ঘোষণা: ৩০ জুনের পর একদিনও ক্ষমতায় থাকবো না সিম নিবন্ধনে নতুন সীমা নির্ধারণ: বিটিআরসির সিদ্ধান্তে পরিবর্তন উনিশ বছরের অপেক্ষা: বাবার স্বীকৃতি চান মৌমি সবার জন্য সতর্ক বার্তা দিল পুলিশ সদর দপ্তর সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবিতে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি সোমবার থেকে নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোকে ৩৩ শতাংশ নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার দাবি সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবিতে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি সোমবার থেকে সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবিতে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি সোমবার থেকে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নিবন্ধন পুনর্বহালের দাবি

নবযুগ: নজরুলের সাংবাদিকতার বৈপ্লবিক অভিযাত্রা

নিজস্ব প্রতিবেদক
সময় : রবিবার, মে ২৫, ২০২৫

 

নবযুগ ছিল একটি ঐতিহাসিক সাহিত্য ও রাজনৈতিক পত্রিকা, যা বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম-এর সম্পাদনায় নতুন যুগের অঙ্গীকারে আত্মপ্রকাশ করে। ১৯২০-এর দশকের প্রেক্ষাপটে, যখন ভারত জুড়ে রাজনৈতিক উত্তেজনা, উপনিবেশবিরোধী আন্দোলন ও সামাজিক জাগরণ তুঙ্গে, তখন নবযুগ আত্মপ্রকাশ করে এক নবপ্রতিজ্ঞা নিয়ে।

 

এই পত্রিকা প্রকাশের পেছনে মূলত ছিলেন শের-এ-বাংলা এ কে ফজলুল হক, যার উদ্যোগে ও নজরুল ইসলামের প্রস্তাবে পত্রিকাটির নাম রাখা হয় ‘নবযুগ’। এর জন্ম হয় রাজনৈতিক পরিবর্তন, সামাজিক ন্যায় এবং সাহিত্যিক মুক্তচিন্তার প্ল্যাটফর্ম হিসেবে। নজরুল, মুজফ্ফর আহমদ ও অন্যান্য সাম্রাজ্যবাদবিরোধী মননের মানুষ একত্র হয়ে এই পত্রিকার মাধ্যমে দেশজ জনসচেতনতা গড়ে তোলার প্রয়াস করেন।

 

নবযুগ-এর প্রথম সংখ্যায় কাজী নজরুল ইসলামের লেখা ‘নবযুগ’ শীর্ষক কবিতাটিই এ পত্রিকার লক্ষ্য ও মেজাজ নির্ধারণ করে দেয়। কবিতায় তিনি ঘোষণা করেন—

 

> “তাই নবযুগ আসিল আবার। রুদ্ধ প্রাণের ধারা

নাচিছে মুক্ত গগনের তলে দুর্ম্মদ মাতোয়ারা।”

 

 

 

এই পত্রিকায় নজরুলের লিখিত সম্পাদকীয় ছিল ভাষায় দৃপ্ত, চিন্তায় বিদ্রোহী। তার লেখাগুলো ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব শ্রেণির মানুষের হৃদয়ে ঝড় তুলত। উপনিবেশবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, নিপীড়ন ও শোষণের বিরুদ্ধে তিনি কলমকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেন।

 

নবযুগ হয়ে ওঠে শ্রমজীবী মানুষের মুখপত্র। ব্রিটিশ শাসনের জুলুম, ত্রাসন ও রাজনৈতিক নিপীড়নের বিরুদ্ধে এর প্রতিটি সম্পাদকীয় ছিল প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর। নজরুলের রচনায় কবিতা ও সাংবাদিকতার অনন্য সংমিশ্রণ এই পত্রিকাকে দিয়েছে এক বিশিষ্ট স্বরূপ।

 

আবুল মনসুর আহমদের কথায়, “তুখোড় সম্পাদকীয় হইল… সবাই বাহ্‌ বাহ্‌ করিতে লাগিলেন।” এর মাধ্যমে বোঝা যায়, নবযুগ সমাজের চিন্তাশীল শ্রেণির মধ্যেও গভীর প্রভাব বিস্তার করেছিল।

 

কবিতা, প্রবন্ধ, ছোটগল্প এবং সমালোচনা মিলিয়ে নবযুগ হয়ে ওঠে উদীয়মান লেখকদের জন্য এক অনন্য মঞ্চ। ব্রিটিশ সরকার একপর্যায়ে পত্রিকাটির জামানত বাজেয়াপ্ত করে বন্ধ করে দেয়। যদিও ফজলুল হকের চেষ্টায় তা পুনরায় প্রকাশিত হয়, শেষপর্যন্ত মতবিরোধের কারণে নজরুল ও মুজফ্ফর আহমদের পদত্যাগের মধ্য দিয়ে পত্রিকাটি বন্ধ হয়ে যায়।

 

নবযুগের মাধ্যমে নজরুলের সাংবাদিকতা যাত্রা শুরু হলেও, এটি শুধুমাত্র একটি পত্রিকা ছিল না—এটি ছিল এক বিপ্লবের ভাষ্য, একটি জাতির মুক্তির স্বপ্ন। এ পত্রিকা নজরুলকে ‘বিদ্রোহী কবি’র খ্যাতি পেতে সাহায্য করেছিল এবং বাঙালির মধ্যে জাগিয়ে তুলেছিল আত্মমর্যাদার চেতনা।

তাই আজও নবযুগ আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়:

সংবাদপত্র হতে পারে মুক্তির হাতিয়ার, যদি তার কলমে থাকে সত্য ও সাহসের দীপ্তি।

 

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

Tags

ChatGPT HSC Icc T20 অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগ আন্দোলন করে রায় পরিবর্তন হয় না আপিল বিভাগে স্থগিত ইমরান খান উপদেষ্টা পরিষদ এইচএসসি কোটা কোটা আন্দোলন খালেদা জিয়া গণতন্ত্র গ্রেপ্তার ১২ চৌরাস্তা বাজার জেলা প্রশাসক ড. ইউনূস ড. মুহাম্মদ ইউনূস ত্রিশাল দুদক নন-ক্যাডার নাহিদ ইসলাম নির্বাচন নির্বাচন কমিশন পাকিস্তান প্রধান উপদেষ্টা প্রশ্নফাঁস প্রাথমিক বিদ্যালয় ফিলিস্তিন বাংলাদেশ বাংলাদেশ রাজনীতি বাংলা ব্লকেড বিএনপি ভারত ময়মনসিংহ মানবাধিকার রাজনীতি রাজনৈতিক দল রাজনৈতিক সংলাপ শেখ হাসিনা সিলেটে কারফিউর মধ্যেও থেমে নেই চিনি চোরাচালান স্বাধীনতা ২ লাখ কোটি টাকা ছাড়াল খেলাপি ঋণের পরিমাণ

পুরাতন খবর

এক ক্লিকে বিভাগের খবর