সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় আদালতে হাজিরা দেওয়ার পর প্রিজন ভ্যানে ওঠার সময় বলেন, “অগ্নিঝরা মার্চে ধর্ষণের বিরুদ্ধে জেগে ওঠো বাংলাদেশ, রুখে দাঁড়াও বাংলাদেশ। জয় বাংলা বলে আগে বাড়ো। জেগে ওঠো আবারও।”
সোমবার (১০ মার্চ) দুদকের দায়ের করা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় হাজিরা দিতে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। এক সাংবাদিক কারাগারে থেকে রোজা রাখতে কষ্ট হচ্ছে কি না জানতে চাইলে পলক বলেন, “না, কষ্ট হচ্ছে না। এবার রিমান্ডেই রোজা শুরু হলো।”
দুপুর ১টা ৫০ মিনিটের দিকে তাকে আদালতে আনা হলে, তিনি বলেন, “কথা বললেই মামলার সংখ্যা বাড়ে, পেছনে হ্যান্ডকাফ দিয়ে রাখে। কথা বলে কী লাভ?”
পলকের আইনজীবীরা তার জামিনের আবেদন করলে ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিব সেটি নামঞ্জুর করেন।
আইনজীবী অ্যাডভোকেট তরিকুল ইসলাম জানান, “পলককে নিয়মিত নতুন নতুন মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে আনা হচ্ছে, যা তার জন্য অত্যন্ত কষ্টদায়ক। এমনকি তার দুই হাত পিছমোড়া করে হাতকড়া পরিয়ে আনা হচ্ছে, যা সাধারণত দাগী অপরাধীদের ক্ষেত্রে করা হয়।”
দুদকের মামলার তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ১২ ডিসেম্বর দুদকের উপ-পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান বাদী হয়ে মামলাটি করেন। এতে অভিযোগ করা হয়, পলক অবৈধ উপায়ে ৮ কোটি ৭৩ লক্ষ ৪৭ হাজার ৪২ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের মালিক হয়েছেন। পাশাপাশি, ২৫টি ব্যাংক হিসাবে মোট ৩২ কোটি ৪ লাখ ৯৫ হাজার ৩১৪ টাকা জমা ও ২৯ কোটি ৮৪ লাখ ৭২ হাজার ৯৫ টাকা উত্তোলনের মাধ্যমে অস্বাভাবিক লেনদেন ও মানিলন্ডারিং করেছেন বলে দাবি করা হয়।
মামলায় দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
গত ১৪ আগস্ট রাতে রাজধানীর নিকুঞ্জ আবাসিক এলাকা থেকে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় পলককে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। এরপর একের পর এক মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে রিমান্ডে নেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক রয়েছেন।