শিরোনাম:
শিরোনাম:
২০২৫ সালের এইচএসসি: পরীক্ষার্থীদের জন্য বিপদ না বাঁচার সুযোগ ইন্টার মায়ামি ফুটবল ক্লাব – ২০২৫ সালের দল, ইতিহাস ও সাফল্য বিশ্লেষণ ৭টি কারণ কেন আপনি Scale AI ব্যবহার করবেন (এবং কবে করবেন না) FIFA Club World Cup 2025: ক্লাব ফুটবলের নতুন অধ্যায়ের সূচনা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে Father’s Day উদযাপন: সংস্কৃতি, তারিখ এবং ইতিহাস যা বাবার প্রতি ভালোবাসা প্রকাশের সেরা দিন Aiden Markram: দক্ষিণ আফ্রিকার আধুনিক ক্রিকেটের সাহসী নেতা Samsung One UI 8 আপডেট ট্র্যাকার: কোন ডিভাইসে কবে আসছে নতুন ফিচার সমৃদ্ধ আপডেট Vivo T4 Ultra: নতুন যুগের স্মার্টফোনের সম্পূর্ণ পর্যালোচনা Oppo K13x: বাজেটের মধ্যে পাওয়া প্রিমিয়াম ফিচারসমৃদ্ধ 5G স্মার্টফোন Xiaomi HyperOS: আপনার স্মার্টফোনের অভিজ্ঞতা বদলে দেবে আশ্চর্যজনক এই ৫টি ফিচার

শতাধিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের লাইসন্সে লুটপাট আড়াল করতে “দায়মুক্তি আইন”

মোঃ মাহবুবুল আলম
সময় : সোমবার, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৪

শেখ হাসিনার টানা ১৫ বছরের শাসনামলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতি ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে, যা দেশের জনগণকে কঠিন অর্থনৈতিক সংকটে ফেলেছে। সরকারের সমর্থনপুষ্ট ব্যবসায়ী ও ব্যক্তিরা বিনা টেন্ডারে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের লাইসেন্স পেয়ে গেছেন, এবং এ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতা রক্ষার কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ২০১০ সালে “বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান)” নামে দায়মুক্তি আইন প্রণয়ন করা হয়, যা বিদ্যুৎ কেন্দ্র অনুমোদনে কোনো প্রশ্ন তোলার সুযোগ বন্ধ করে দেয়। এর ফলে কিছু মানুষ বিপুল অর্থের মালিক হলেও, সাধারণ মানুষকে বিদ্যুতের উচ্চমূল্য পরিশোধের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এর গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মেয়াজ্জেম এ বিষয়ে মন্তব্য করে বলেন, “দায়মুক্তি আইনের অধীনে শতাধিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অনুমতি বিনা টেন্ডারে দেওয়া হয়েছে, যা স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতার ঘাটতি সৃষ্টি করেছে।” এ ধরনের চুক্তি করার ফলে দেশে বিদ্যুৎ খাতের লুটপাট বেড়েছে, এবং দেশের জনগণের কাঁধে ঋণের বোঝা চেপেছে। সরকারের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা না থাকায় নতুন ঋণ নিয়ে পুরনো ঋণ পরিশোধ করতে হচ্ছে, ফলে সরকার ঋণের এক দুষ্ট চক্রে আটকে গেছে। তিনি আরও বলেন, “দায়মুক্তি আইন বাতিল করা উচিত এবং এ আইনের আওতায় করা চুক্তিগুলো পুনর্মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।”

সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, আওয়ামী লীগ সরকারের তিন মেয়াদে মোট ৮২টি আইপিপি (ইনডিপেন্ডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার) এবং ৩২টি কুইক রেন্টাল ও রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অনুমোদন দেওয়া হয়। এসব বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে প্রকৃত ব্যয়ের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি খরচ দেখানো হয়েছে, যা দুর্নীতির পরিচায়ক। এর ফলে বিদ্যুৎ খাতের ব্যয় বৃদ্ধি পায়, এবং বারবার বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর মাধ্যমে সাধারণ জনগণের ওপর চাপ সৃষ্টি হয়। শিল্পকারখানাগুলোর উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় মূল্যস্ফীতি বাড়ে, যা দেশের অর্থনীতির ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে।

অবশ্য বিদ্যুৎ খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ানো হলেও, বিদ্যুৎ সরবরাহে স্বচ্ছতা ছিল না। দেশে গড়ে ১২ থেকে ১৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হলেও, উৎপাদন ক্ষমতা ২৭ হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত বাড়ানো হয়। কিন্তু এই বাড়তি বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে কোনো বিদ্যুৎ ব্যবহার না করে, ক্যাপাসিটি চার্জের নামে কোটি কোটি টাকা লুট করা হয়। এদিকে, বিদ্যুৎ ঘাটতির কারণে দেশের জনগণ লোডশেডিংয়ের শিকার হলেও সরকার শতভাগ বিদ্যুতায়নের দাবি করে।

আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে বিদ্যুৎ খাতের লুটপাটের সহযোগী হিসেবে বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তিনি বিদ্যুৎ খাতের দুর্নীতির সাথে সরাসরি জড়িত ছিলেন এবং তার ভূমি দস্যুতার অতীত নিয়ে বিতর্কও রয়েছে। শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালানোর পর তার সাথে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীরাও পালিয়েছে বলে জানা গেছে।

বিদ্যুৎ বিভাগের এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, আওয়ামী লীগ সরকারের তিন মেয়াদে বিদ্যুৎ খাতে মোট ব্যয় হয়েছে ২ হাজার ৮৩০ কোটি ডলার, যা বর্তমান বিনিময় হারে প্রায় ৩ লাখ ৩৩ হাজার ৯৪০ কোটি টাকার সমান। এসব ব্যয় জনগণের ওপর বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির মাধ্যমে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে।

বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান দায়িত্ব নেওয়ার পর বিদ্যুৎ খাতে নতুন নীতিমালা প্রণয়নের ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি জানান, “বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন বাতিল করা হবে এবং এ আইনের অধীনে করা সব চুক্তি পুনর্মূল্যায়ন করা হবে।” এছাড়াও, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্য নির্ধারণের ক্ষমতা সরকারের হাতে না রেখে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের ওপর ন্যস্ত করা হবে।

সরকারের এ উদ্যোগ বিদ্যুৎ খাতে স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতা ফিরিয়ে আনার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

Tags

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগ আদালতের রায় আন্তর্জাতিক সম্পর্ক গণতন্ত্র গ্রেপ্তার ১২ চট্টগ্রাম ছাত্র আন্দোলন জাতীয় নির্বাচন জাতীয় ঐক্য ড. ইউনূস ড. মুহাম্মদ ইউনূস তারেক রহমান ত্রিশাল দুর্নীতি নাহিদ ইসলাম নির্বাচন নির্বাচন কমিশন পাকিস্তান প্রধান উপদেষ্টা প্রশাসনিক সংস্কার ফিলিস্তিন বাংলাদেশ বাংলাদেশ অর্থনীতি বাংলাদেশ নির্বাচন বাংলাদেশ ফুটবল বাংলাদেশ রাজনীতি বিএনপি ভারত ময়মনসিংহ মানবাধিকার মুহাম্মদ ইউনূস রাজনীতি রাজনৈতিক ঐক্য রাজনৈতিক দল রাজনৈতিক সংলাপ শেখ হাসিনা সংবিধান সচিবালয় সিঙ্গাপুর বনাম বাংলাদেশ সিলেটে কারফিউর মধ্যেও থেমে নেই চিনি চোরাচালান সুশাসন সেনাবাহিনী ২ লাখ কোটি টাকা ছাড়াল খেলাপি ঋণের পরিমাণ

পুরাতন খবর

এক ক্লিকে বিভাগের খবর
error: Content is protected !!
error: Content is protected !!