ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, শেখ হাসিনার সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার আগেই ভারত বাংলাদেশে তার বিরুদ্ধে তৈরি হওয়া জনমতের বিষয়টি সম্পর্কে অবগত ছিল। তবে হাসিনার ওপর ভারতের পর্যাপ্ত প্রভাব না থাকায় দেশটি বিশেষ কিছু করতে পারেনি, কেবল তাকে ‘পরামর্শ’ দেওয়ার সুযোগ পেয়েছিল।
শনিবার (৫ আগস্ট) ভারতের পররাষ্ট্রবিষয়ক সংসদীয় পরামর্শক কমিটির বৈঠকে জয়শঙ্কর এ তথ্য জানান। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু-র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জয়শঙ্কর কমিটির কাছে দাবি করেন যে, শেখ হাসিনাকে প্রভাবিত করার মতো ‘প্রয়োজনীয় প্রভাব’ ভারতের ছিল না। তারা শুধুমাত্র পরামর্শ দিতে পেরেছেন।
এছাড়া, তিনি জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্কের একটি সাক্ষাৎকারের বিষয়টিও বৈঠকে তুলে ধরেন। এই বৈঠকে ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে পররাষ্ট্রনীতির বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়, যেখানে বাংলাদেশ, মিয়ানমার, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তান বিশেষ গুরুত্ব পায়।
সার্ক পুনরুজ্জীবনের সম্ভাবনা
বৈঠকে মিয়ানমারের গৃহযুদ্ধ ও এ বিষয়ে ভারতের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা হয়। পাশাপাশি, দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (সার্ক)-এর ভবিষ্যৎ নিয়েও আলোচনা করা হয়। জয়শঙ্কর ইঙ্গিত দেন যে, সার্ক বাতিল হয়নি, বরং এটি বর্তমানে বিরতিতে রয়েছে। তার বক্তব্য থেকে ভবিষ্যতে সার্কের কার্যক্রম পুনরায় শুরুর সম্ভাবনা প্রকাশ পায়। উল্লেখ্য, ২০১৬ সাল থেকে সার্ক কার্যত অচল হয়ে আছে।
প্রতিবেশী দেশগুলোতে চীনের প্রভাব ও ভারতের অবস্থান
ভারতের সংসদ সদস্যরা বৈঠকে প্রতিবেশী দেশগুলোতে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং জানতে চান, আগামী এক দশকে বাংলাদেশ, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা ও নেপালে চীনের প্রভাব মোকাবিলায় ভারত কী ধরনের পদক্ষেপ নেবে।
এস. জয়শঙ্কর বৈঠকে জানান, বাংলাদেশে ‘বহিরাগত শক্তির’ ভূমিকা রয়েছে। তিনি চীনকে ‘প্রতিপক্ষ’ নয়, বরং ‘প্রতিযোগী’ হিসেবে দেখেন। ভারতের পররাষ্ট্রনীতিতে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ককে কিভাবে এগিয়ে নেওয়া হবে, সে সম্পর্কেও আলোচনা হয়।