বাংলাদেশের অর্থনীতিকে আরো গতিশীল ও বৈশ্বিক বিনিয়োগের জন্য আকর্ষণীয় করে তোলার লক্ষ্যে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ধারাবাহিকভাবে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করছে। এরই অংশ হিসেবে বিডার আয়োজনে গত ৭ থেকে ১০ এপ্রিল ২০২৫ পর্যন্ত ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয় একটি আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সম্মেলন। সেই সফল আয়োজনের ধারাবাহিকতায় এবার বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে একটি যৌথ বিনিয়োগ ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্মেলনের আয়োজন করা হচ্ছে, যা বিনিয়োগ সম্ভাবনার নতুন দ্বার উন্মোচন করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এই বহুল প্রত্যাশিত ‘চীন-বাংলাদেশ বিনিয়োগ ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্মেলন’ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১ জুন ২০২৫, দিনব্যাপী এক জমকালো আয়োজনে। বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. আশিক চৌধুরী তার ফেসবুক পোস্টে এই সম্মেলনের চূড়ান্ত দিনক্ষণ ঘোষণা করেন। তিনি জানান, এই সম্মেলন বাংলাদেশ ও চীন সরকারের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত হচ্ছে, যা দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরও গভীর করবে।
সম্মেলনে অংশগ্রহণ করবেন চীনের প্রায় ১০০টি প্রতিষ্ঠানের ২৫০ জন বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ী। এর মধ্যে রয়েছে Fortune 500 তালিকাভুক্ত ৬ থেকে ৭টি প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তারা, যারা বাংলাদেশে বিনিয়োগের সম্ভাবনা ও সুযোগ নিয়ে আলোচনা করবেন। এছাড়াও, চীনের ৪টি গুরুত্বপূর্ণ চেম্বার অব কমার্সের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত থাকবেন। এটি হবে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো কোনো একক দেশ থেকে এত সংখ্যক বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ীর একযোগে সফর।
বিডা চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী জানান, চীনা বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও এই উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন। এটি বাংলাদেশ-চীন কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের একটি মাইলফলক বলে বিবেচিত হচ্ছে। সম্মেলনে বিনিয়োগ, শিল্পায়ন, প্রযুক্তি হস্তান্তর, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং রপ্তানি বাড়ানোসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। এতে বাংলাদেশের বিভিন্ন খাত যেমন—বস্ত্র ও তৈরি পোশাক, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ, নবায়নযোগ্য জ্বালানি এবং পরিবহন খাতে চীনা বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়বে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
এই সম্মেলন শুধু বিনিয়োগই নয়, বরং দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদী ব্যবসায়িক সম্পর্ক গড়ে তোলার একটি বড় প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠতে পারে। সরকারের নীতিগত সহায়তা এবং বিডার নেতৃত্বে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি হওয়ায় বাংলাদেশ এখন বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্য হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছে। ১ জুনের এই সম্মেলন নিঃসন্দেহে দেশের অর্থনীতিতে একটি ইতিবাচক বার্তা পৌঁছে দেবে এবং ভবিষ্যতের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে গতি সঞ্চার করবে।